আলোর ফেরিওয়ালা

ঝিনাইদহ, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, ঝিনাইদহ, বার্তা ২৪.কম | 2023-09-01 15:41:37

চুড়ি-মালা, চুলের ফিতা, শিশুদের খেলনা, হাড়ি-পাতিল, কাপড় ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ফেরিওয়ালার সাথে গ্রাম গঞ্জে, শহর বন্দরে দেখা মেলে হরহামেশাই। এবার আলোর ফেরিওয়ালার সাথে দেখা মিললো ঝিনাইদহের হরিনাকুণ্ডুর প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে। গ্রাহকদের বিদ্যুৎ লাইনের জন্য এখন আর বিদ্যুৎ অফিসে ধরনা দিতে হয় না। আলোর ফেরিওয়ালার মাধ্যমে বিদ্যুৎ গিয়ে হাজির হচ্ছে গ্রাহকদের দোর গোড়ায়। ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ অফিস এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

জানা যায়, জেলার সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দুরে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা। ৮ টি ইউনিয়নের এ উপজেলায় ১৩৬ টি গ্রাম রয়েছে। যেখানে প্রায় ৩ লাখ মানুষের বাস। চাঁদপুর ইউনিয়ন ছাড়া বাকি ইউনিয়ন গুলোতে বর্তমানে ৩৭ হাজার ২১৫ জন পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে।

হরিনাকুণ্ডু পৌরসভার চিতলীয়া পাড়ার আলম মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা হলো আলোর ফেরিওয়ালা এজিএম শেখ আব্দুর রহমানের সাথে। সেসময় তিনি ব্যস্ত ২ জন লাইনম্যান, ১ একজন ওয়ারিং পরিদর্শক ও ১ একজন সাব অ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ারকে নিয়ে ওই বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে।

এসময় কাজে ফাঁকে ফাঁকে কথা হয় তার সাথে, তিনি বলেন দেশে এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে গ্রাহকরা নানাভাবে হয়রানির স্বীকার হন। অফিসে দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। দালালে খপ্পরে পরে বাড়তি অর্থ ব্যয় হয় তাদের। গ্রাহকদের দুর্ভোগের কথা ভেবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া যায় সেই পরিকল্পনা থেকেই তিনি ভ্যান গাড়িতে বৈদ্যুতি সরঞ্জামাদি নিয়ে গ্রামে গ্রামে বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন। এটাকে তিনি আলোর ফেরিওয়ালা নাম দিয়েছেন। গ্রাহকের বাড়িতে বসেই টাকা নিচ্ছেন, রশিদ দিচ্ছেন, দিচ্ছেন সংযোগ। পাঁচ মিনিটেই জ্বলছে বাতি।

তিনি আরও জানান, গ্রামের বাড়িতে সংযোগ দিতে নিচ্ছেন অফিস নির্ধারিত জামানতে চারশত টাকা, আবেদন ফি ভ্যাটসহ ১ শত ১৫ টাকা ও সমিতির সদস্য চাঁদা পঞ্চাশ টাকা। সর্বোমোট ৫ শত ৬৫ টাকায় মিটার সহ বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়ে যাচ্ছে বাড়িতে বসেই গ্রাহকরা।

গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি সংযোগ দিয়েছেন ৫৪ টি। ভোটের কারণে বন্ধ থাকার পর চলতি মাসের শুরু থেকে সংযোগ দেওয়া শুরু হয়েছে। উপজেলার সমস্ত বাড়িতে বিদ্যুৎ না পৌছানো পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যহত থাকবে বলে তিনি জানান।

গ্রাহক আলম মিয়া বলেন, আমার বাড়িতে বিদ্যুৎ ছিল না। আলোর ফেরিওয়ালা এজিএম শেখ আব্দুর রহমান ভ্যান যোগে ঘুরছিলেন। আমি বিদ্যুৎ সংযোগ চাওয়ার পর তিনি এখানে বসেই রশিদ দিয়ে টাকা নিলেন। কোন প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছি।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহা-ব্যবস্থাপক আলতাফ হোসেন জানান, হরিনাকুন্ডু বিদ্যুৎ সমিতি যে কর্মসূচি নিয়েছে তা অনুকরণীয়। বাকি উপজেলা গুলোতেও তিনি আলোর ফেরিওয়ালা কার্যক্রম শুরু করবেন।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর