নড়াইলে সরিষার আবাদে লক্ষ্য মাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে কৃষি বিভাগ। লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে কম জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে ফলন ভাল হওয়ায় সরিষা উৎপাদন বাড়বে।
জানা গেছে, সরিষা একটি তৈল জাতীয় ফসল সরিষা চাষ করলে একই জমিতে ৩টি ফসল ফলানো সম্ভব। তাই কৃষকরা আমন ধান কাটার সময় জমিতে সরিষার আবাদ করে থাকে স্বল্প সময়ের জন্য। সরিষা তুলে পাট আথবা তিল লাগানো হয়। তবে সময় মত জমিতে বীজ বপনের উপযোগি না হওয়ায় সরিষা বীজ বপন করতে পারেনি কৃষকরা। অনেকে জমিতে সেচ দিয়ে সরিষার আবাদ করেছে। এদিকে সরিষা ফুলের যাদুতে মুগ্ধ হয়ে মধু আহরণে মৌমাছির গুনগুন শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে সরিষা ক্ষেতগুলো।
নড়াইলের বিভিন্ন এলাকার মাঠ এখন সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে ক্ষেত ভরে গেছে। সরিষা ফুলের মন মাতানো গন্ধ আর মৌমাছির গুনগুন শব্দে মুখরিত সরিষার ক্ষেতগুলো। স্থানীয় জাতের সরিষাসহ সেচের মাধ্যমে বারি-৯, ১১, ১৪, ১৫ এবং সম্পদ জাতের উচ্চ ফলনশীল সরিষা বোপন করে আশানুরূপ ফলন হয়েছে বলে জানান কৃষকরা। কম খরচে অধিক ফলন হওয়া এবং পোকার আক্রমণ কম হওয়ায় কৃষকেরা সরিষা আবাদ করছে। এ ছাড়া সরকার সহজ শর্তে ও স্বল্প সূদে কৃষকদের ঋণ প্রদানসহ সময়মত সার ও বীজ সরবারাহ করায় সরিষা আবাদে কৃষকদের আগ্রহ আরো বেড়েছে বলে জানান কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৬ হাজার ৭৭০ হেক্টার জমিতে আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ১৮০ হেক্টার জমিতে। লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে চেয়ে ৫৯০ হেক্টর কম জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।
সদর উপজেলার সিমানন্দপুর গ্রামের ইশারত শেখ বলেন, জমি ভিজা না থাকলে সরিষার আবাদ করা যায়না। বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে জমিতে সেচ দিয়ে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। জমিতে ইতিমধ্যে ফুল এসেছে আশা করছি ভাল ফলন হবে।
দুর্গাপুর গ্রামের লিটন বিশ্বাস বলেন, সরিষা চাষে খরচ কম হয় এবং তেমন একটা পোকার আক্রমণ থাকে না তাই সরিষার আবাদ করছিলাম।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ৬ হাজার ৭৭০ হেক্টার জমিতে আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ১৮০ হেক্টার জমিতে। লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে চেয়ে ৫৯০ হেক্টর কম জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।
তবে সার, বীজসহ বিভিন্ন উপকরণের যে সহযোগিতা সরকার করেছে, এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে আগামীতেও এ এলাকার চাষীরা ব্যাপকভাবে সরিষার আবাদ আগামীতে আরও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরও বলেন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদ কিছুটা কম হলেও ফলন ভাল হওয়ায় উৎপাদন ভাল হবে। নড়াইলের ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে বলেও দাবি করেন এই কৃষি কর্মকর্তা।