পটুয়াখালীর বাউফলের পাল পাড়ায় মাটির তৈরি বিভিন্ন পণ্য এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও রফতানি হচ্ছে। ঢাকাসহ দেশের বড় বড় মার্কেটগুলোতে এই পণ্যের কদর দিন দিন বাড়ছে। তবে সরকারিভাবে মৃত্তিকা শিল্পের উন্নয়নে সহযোগিতা করলে বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশি এই পণ্য বিপ্লব ঘটাতে পারবে বলে মনে করেন এ শিল্পের উদ্যোক্তারা।
বর্তমানে সিঙ্গাপুর, জাপান, ইন্ডিয়া, মালয়েশিয়া সহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বাউফলের মাটির তৈরি বিভিন্ন তৈজসপত্র রফতানি হচ্ছে। আনুষ্ঠানিকভাবে এ পণ্য রফতানির পরিমাণ কম হলেও বিভিন্ন উপহার সামগ্রী হিসেবে দেশের বাইরে মাটির তৈরি এসব পণ্যের চাহিদা অনেক বেশি বলে জানান এ শিল্পর সাথে জড়িতরা।
পাল পাড়ার উদ্যোক্তা বরুণ পাল জানালেন, বছরের বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে এক সময়ে মাটির তৈরির পণ্যে চাহিদা থাকলেও প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে এখন সারা বছরই উৎপাদন হয় মাটির পণ্য। এক সময়ে শোপিস কিংবা ফুলের টবের মত পণ্য তৈরি করলেও বর্তমানে প্লেট, গ্লাস, বাটি, চায়ের কাপ থেকে শুরু করে ডিনার সেটের মত নিত্য প্রয়োজনীয় ১০৮ ধরনের পাত্র তৈরি করছেন তারা।
নান্দনিক গঠন আর হাতের কারুকাজে দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এই পণ্যগুলো। এরই সাথে তাল মিলিয়ে বেড়েছে ব্যবসায়ের পরিধি, সুযোগ হয়েছে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের। তবে এই শিল্পের প্রতি সরকারের বিশেষ দৃষ্টি ও আধুনিকায়নের জন্য ঋণ সহায়তার দাবি জানালেন উদ্যোক্তারা। তারা বলছেন, 'সহযোগিতা পেলে মৃত্তিকা শিল্প দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।'
বাউফলের উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিজুস চন্দ্র দে জানালেন, মৃত্তিকা শিল্পের উন্নয়নের পাশাপাশি এই শিল্পের প্রসারে ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে কিভাবে তাদের পণ্যের মান আরও উন্নত করা যায় এবং মৃত্তিকা শিল্পের বাজার আরও বিস্তৃত করা যায় সে জন্য আমরা কাজ করছি। এ বিষয়ে সরকারি সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ চলছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
গত কয়েক দশকে দেশের দক্ষিণ উপকূলে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা এই শিল্প এখন সারা দেশে পরিচিতি লাভ করেছে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে বাঙালি সংস্কৃতির বিভিন্ন পালা পার্বণে মাটির তৈরি এসব তৈজসপত্র বড় একটি চাহিদা থাকলেও বর্তমানে সারা বছরই এর জমজমাট বেচা বিক্রি থাকে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।