বহুবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে ধরনা দিয়েও মেলেনি গ্রামের রাস্তা। অবশেষে নিজেদের কষ্ট আর শ্রম দিয়ে নিজেরাই তৈরি করছে গ্রামের রাস্তা। নিজেদের গ্রামের সাথে পাশের গ্রামের সংযোগের প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা তৈরি করছেন চুয়াডাঙ্গার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের প্রতিটি পরিবারের সদস্যরা। প্রায় দুইশ থেকে তিনশ জন গ্রামের মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এই কাজে নিজেদের নিয়োজিত করেছেন।
প্রতিদিন পালাক্রমে নিজেদের ঝুড়ি, কোদাল নিয়ে রাস্তা তৈরির কাজে অংশ নিচ্ছেন তারা। ইতোমধ্যে রাস্তার কাজ প্রায় অর্ধেক শেষ হয়ে এসেছে। তবে মাটি দিয়ে রাস্তার প্রাথমিক কাজ শেষ হবার পর সরকারি অর্থায়নে রাস্তাটি পাকাকরণ করার দাবি তুলেছে গ্রামবাসী।
গ্রামবাসীরা জানায়, চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার গাড়াবাড়িয়া ও মাখালডাঙ্গা গ্রামের মাঝে এই সংযোগ সড়কটি কিছুদিন আগেও ছিল চলাচলের অনুপযোগী। বর্ষকালে গ্রামের কেউ মারা গেলে লাশ কবরস্থানে নিয়ে যেতে পারত না গ্রামবাসী। রাস্তার জন্য অনেকবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে ধরনা দিয়েও মেলেনি কোন আশ্বাস। সড়কটি চলাচলের উপযোগী করতে সরকারিভাবে কোন উদ্যোগ না নেয়ায় গ্রামের তিন শতাধিক পুরুষ অনেকটা বাধ্য হয়েই নিজেরদের স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তার নির্মাণকাজ শুরু করেন।
রাস্তা তৈরিতে অংশ নেয়া গ্রামের কৃষক কাদের বলেন, 'গত কয়েকদিন থেকে শুরু হয়েছে এ কাজ। ইতোমধ্যে অর্ধেক কাজ শেষ হয়েছে। রাস্তাটি সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেকে তাদের স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তাটি তৈরি করবে। ছোট-বড়, ধনী-গরীব সকল ভেদাভেদ ভুলে গ্রামের রাস্তা তৈরির কাজে এখন ব্যস্ত গ্রামবাসী।'
এলাকার স্কুল পড়ুয়া দশম শ্রেণির ছাত্র সেলিম জানান, তার মত গ্রামের অনেকেই নিজেদের শ্রমে তৈরি করছে রাস্তা। নিজেদের তৈরি এই রাস্তাটি গ্রামের যাতায়াতসহ অর্থনৈতিক সুফল বয়ে আনবে বলে মনে করে সে।
গ্রামের গৃহবধূ আকলিমা জানান, তার স্বামী আর দুই ছেলেও গেছে গ্রামের রাস্তা তৈরি করতে। রাস্তাটি হলে পাল্টে যাবে গোটা গাড়াবাড়িয়া গ্রামের দৃশ্য।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াশীম বারী বার্তা২৪-কে বলেন, 'সরকারি তহবিল থেকে গ্রামের রাস্তাটির জন্য যতটুকু সম্ভব ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
সরকারি এই কর্মকর্তার আশ্বাস বাস্তবায়িত হয়ে দুই গ্রামের মাঝে সংযোগ স্থাপনে সড়কটি দ্রুত নির্মাণ হবে বলে প্রত্যাশা গ্রামবাসীর।