পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুরের অভ্যন্তরীণ সড়কের দু’পাশের গাছ কেটে নিচ্ছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির। গত এক সপ্তাহ যাবৎ চেয়ারম্যানের বাড়ির লোকজন এসব গাছ কেটে নিলেও প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না স্থানীয়রা।
তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে স্থানীয় বাদুরা বাজারের একটি সমিল থেকে ইতোমধ্যে বেশ কিছু গাছের টুকরা জব্দ করা হয়েছে।
রোববার (১৩ জানুয়ারি) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়ক থেকে পূর্বদিকের শাখা রাস্তা শরীফ বাড়ির স্ট্যান্ড থেকে আউলিয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন পর্যন্ত সড়কের দু’পাশের মেহগনি ও আকাশমনি গাছ কেটে নেয়া হয়েছে। সড়কের মোল্লাবাড়ির উত্তর পাশ থেকে ২টি আকাশমনি, মইনউদ্দিন হাওলাদারের বাড়ির সামনে থেকে একটি মেহগনি এবং দুটি আকাশমনি, শরিফ বাড়ি থেকে খাঁ বাড়ি পর্যন্ত ২টি মেহগনি ও ২টি আকাশমনি সহ বিভিন্ন বাড়ি, মসজিদ, কালভার্ট ও বাজার থেকে অন্তত ১৯টি বৃহৎ অকারের গাছ কেটে নেয়ার প্রমাণ মিলেছে। এসব গাছের গোড়া পরে থাকলেও তা আড়াল করতে সক্রিয় চেয়ারম্যানের লোকজন।
স্থানীয়রা জানান, গত এক সপ্তাহ যাবৎ চেয়ারম্যানের ভাতিজা হিসেবে পরিচিত বেল্লাল মৃধা এবং সোহেল মৃধার নেতৃত্বে এসব গাছ কেটে নেয়া হয়েছে। তবে গাছ কেটে নেয়ার আগে চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির নিজেই এসব গাছ দেখিয়ে দিয়েছেন বলেও জানান তারা।
প্রায় এক দশক আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্মিত এ সড়কের দু’পাশে সারি করে মেহগনি ও আকাশমনি গাছ লাগানো হয়। সে সময় একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার তত্ত্বাবধানে এ গাছ রোপণ করা হলেও স্থানীয়রা এর দেখভাল ও পরিচর্যার দায়িত্বে ছিলেন। সে সময়ে স্থানীয়দের গাছের একটি লভ্যাংশ দেয়ার কথা ছিল। তবে হঠাৎ করেই চেয়ারম্যান তার লোকজন দিয়ে গাছ কেটে নেয়ায় হতবাক তারা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির জানান, গাছ কাটার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি বর্তমানে এলাকার বাইরে আছেন। এলাকায় ফিরে এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেবেন।
এদিকে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার লতিফা জান্নাতি জানান, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে কিছু গাছ স্থানীয় একটি সমিল থেকে জব্দ করা হয়েছে। কী পরিমাণ গাছ কাটা হয়েছে তা নিরূপণ করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, বর্তমানে চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির নিজে বাড়ি তৈরি করছেন। তার বাড়ির আসবাবপত্র ও দরজা জানালা তৈরির কাজে কাঠ ব্যবহার করতেই এসব গাছ কাটা হয়েছে।