ভূমি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ফসলি জমির মাটি বিক্রির মহোৎউৎসব চলছে ঢাকার নবাবগঞ্জে। উপজেলার কৈলাইল, শোল্লার আওনা চক, সিংহরা, চক সিংজোর, মদনমহন পুর, শিকারীপাড়া, কলাকোপা ইউপির সাহেবখালিসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে চোখে পড়ে মাটি বিক্রির এ চিত্র।
আর এসব মাটির ব্যবহার হচ্ছে কৃষি জমি সংলগ্ন ইটভাটা ও স্থাপনা নির্মাণের কাজে। মাটিখেকোদের উৎপীড়নে ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমির মালিকরা। তাদের দাবি, প্রশাসনের সাথে আঁতাত করে ম্যানেজ করেই সারা বছর মাটি বিক্রির ব্যবসা চালাচ্ছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
ভূক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, ফসলি জমির মাটি বিক্রির ব্যবসা চালাতে প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সঙ্গে আঁতাত করতে সদা তৎপর থাকেন একটি প্রভাবশালী চিহ্নিত সিন্ডিকেট।
আর এই সিন্ডিকেট চক্রটি যখন যার হাতে ক্ষমতা ও যে দল ক্ষমতায় থাকে সেই দলের নেতাকর্মী পরিচয় দিয়ে প্রতিবছর হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
কৈলাইল গ্রামের রুহিদাস চাঁন বলেন, ‘আমাদের অঞ্চলের ভূমিখেকো ক্ষুদু মেম্বার, মহরচাঁন সারাবছর মাটি বিক্রি করলেও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। মাঝে মধ্যে পুলিশ অভিযান চালায়।’
‘উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিদের সাথে ক্ষুদু মেম্বারের রয়েছে হটলাইন। উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা মাঝে মাঝে বেড়াতে আসেন তার বাড়িতে।’
উপজেলার রাজপাড়া এলাকার বাসিন্দা সেলিম ও মমতাজ বেগম বলেন, ‘দোহার উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর এলাকার সাহেবখালীর জে.বি.সি, জেপিবি ইটভাটার কারণে সড়ক ও কৃষিজমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। মাটি কেটে মাহেন্দ্র গাড়ি দিয়ে ই্টভাটায়সহ বিভিন্ন স্থানে নেওয়ার কারণে সড়কগুলো যাতায়াতের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।’
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার শিকারীপাড়ার ডিএনবি ও চুনাকাটিবিলের জেবিসি, সাহেবখালীর জে.বি.সি, জেপিবি, মাঝিরকান্দার ডি.এন.বি ও শোল্লা পালিঝাপের এস.এসবি ব্রিকস, কৈলাইল ইউনিয়নে জে.বিসি, এনবিএস, কে.এইচ.বি নামের ব্রিকফিল্ড মালিকরা শত শত বিঘা কৃষি জমির মাটি উত্তোলন করে কৃষি অধ্যুষিত এই অঞ্চলের কৃষকদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষক সমিতির নেতা হারুন মিয়া বলেন, ‘আবাদযোগ্য কৃষিজমি বিভিন্ন কৌশলে খরিদ করে বছরের পর বছর মাটি বিক্রির ব্যবসা চালাচ্ছেন মাটিখেকো নামে পরিচিত বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। ইটভাটার কারণে কৃষকরা জমি হারানোর দুশ্চিন্তায় আছেন।’
‘উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীর কতিপয় কর্মকর্তাদের সাথে তাদের রয়েছে দহরম মহরম সর্ম্পক। অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয় না বরং হামলা, মামলার শংঙ্কায় পড়তে হয়।’
নবাবগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনজুর হোসেনের কাছে কৃষি জমির মাটি ইটভাটায় যাচ্ছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’