কমরেড অমল সেনের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নড়াইলের সীমান্তবর্তী এলাকা বাকড়িতে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী অমল সেন মেলা। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ মেলা দেখতে ছুটে আসছেন আশেপাশের কয়েকটি জেলার মানুষ।
এবারের মেলাতে বিশেষ নজর কেড়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বায়োস্কোপ। আধুনিক সমাজ থেকে হারিয়ে যাওয়া এ বায়োস্কোপ দেখতে ভিড় করছে কোমলমতি শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
জানা গেছে, প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও কমরেড অমল সেন স্মৃতি রক্ষা কমিটির আয়োজনে নড়াইলের সীমান্তবর্তী এলাকা বাকড়িতে বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী অমল সেন মেলা। এবারের মেলায় শিশুসহ দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে গ্রামবাংলা থেকে হারিয়ে যাওয়া বায়োস্কোপ দেখা।
যেখানেই মেলা হয় সেখানেই বায়োস্কোপের বাক্সটি নিয়ে চলে যান ৫২ বছরের ওলিয়ার রহমান। এ মেলায়ও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। নড়াইলে ছুটে এসেছে শিশুদের বিনোদন দিতে। কাঠের এই বাক্সটির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী, দেব-দেবী, নায়ক-নায়িকা, বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের ছবি দেখে আনন্দে আত্মহারা কোমলমতি শিশুরা।
ঝিনাইদহর শৈলকুপা উপজেলার বগুড়া গ্রামে ওলিয়ার রহমান বাড়ি। সংসারে রয়েছে স্ত্রীসহ ২ ছেলে ও ২ মেয়ে। দীর্ঘ ২৫ বছর যাবত বায়োস্কোপ দেখিয়ে সংসার চালিয়ে জীবন-যাপন করছেন। এর পর প্রায় ১০ বছর বায়োস্কোপ দেখানো বন্ধ থাকলেও ফিরে এসেছেন নতুন করে। আগে বিভিন্ন হাট-বাজারে দর্শকদের বায়োস্কোপ দেখিয়ে ৪০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত আয় হতো। বর্তমানে দিনের খরচ বাদে ৩ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন তিনি।
ওলিয়ার রহমান জানান, আগে ৫০ পয়সায় জন প্রতি বায়োস্কোপ দেখালেও ধীরে ধীরে এখন ১০ টাকায় উত্তীর্ণ হয়েছে। নতুন করে বায়োস্কোপের বাক্সটি তৈরি করতে সাড়ে ৪ হাজার টাকা ব্যায় করতে হয়েছে। সাথে রয়েছে বিভিন্ন ছবিসহ অন্যান সরঞ্জমাদি।
বাইস্কোপ দেখে বিলাশ বিশ্বাস নামের এক দর্শক বলেন, ‘আমি আগে কখনো বায়োস্কোপ দেখিনি এবারই প্রথম দেখলাম।
অঞ্জন দাস নামের আরেকজন বলেন, ‘আমাদের বাবা-ঠাকুরদার কাছে বায়োস্কোপের গল্প শুনেছি। আজ দেখলাম, সত্যিই অনেক ভাল লাগছে।’
অনিতা নামের একজন বলেন, ‘বায়োস্কোপ প্রথমবার দেখলাম। এর মধ্যেও অনেক কিছু শেখার আছে।’
আধুনিক সভ্যতার যুগে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পুরাতন এই বিনোদন টিকিয়ে রাখার দাবি নড়াইলের সাংস্কৃতিক কর্মি শামীমূল ইসলাম টুলুর।