দরপতনে বাঁধাকপি এখন গরুর খাবার

ঝিনাইদহ, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, ঝিনাইদহ, বার্তা ২৪.কম | 2023-09-01 01:41:35

ক্রমাগত দরপতনে লোকসানের সম্মুখীন ঝিনাইদহের বাঁধাকপি চাষিরা। পানির দরে কপি বিক্রিতে তাদের উৎপাদন খরচই উঠছে না। ফলে তারা এখন আর বিক্রি না করে জমির অর্ধেক কপিই খাওয়াচ্ছেন গরুকে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেওয়া তথ্য মতে, এ বছর জেলার ৬ উপজেলায় সবিজ আবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে রয়েছে বাঁধাকপি, ফুলকপিসহ নানা সবজি।

জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সবজির ফলন ভাল হয়েছে। বিশেষ করে বাঁধাকপির ভাল ফলন পেয়েছেন চাষিরা। তবে দাম পাচ্ছে না তারা। শীতের শুরুতে বাজারে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বাঁধাকপির দাম ভাল ছিল। তবে এখন বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে পানির দরে। ক্ষেত থেকে দু থেকে আড়াই কেজি সাইজের প্রতি পিস বাঁধাকপি ২ থেকে ৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এত কম দামে বিক্রি করে চাষির উৎপাদন খরচই উঠছে না।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাঁচটিকারি গ্রামের চাষি খবির বিশ্বাস জানান, এবার ১২ কাঠা জমিতে তিনি বাঁধাকপি চাষ করেছেন। যশোর থেকে প্রতি পিস চারা ১ টাকা দরে কিনে এনেছেন। ক্ষেতে ৪ হাজার পিস কপি হয়েছে। সার, কীটনাশক ও কামলা খরচসহ প্রতি পিস কপি উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৭ থেকে ৮ টাকা। কিন্তু বাঁধা কপি বিক্রি করছেন ২ থেকে ৩ টাকা পিস।

এতে মোটা অংকের টাকা লোকসান হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

একই গ্রামের চাষি জমির উদ্দিন জানান, দুই সপ্তাহ আগে ১২ হাজার টাকায় ট্রাক ভাড়া দিয়ে দু হাজার কপি ঢাকা নিয়ে যান। ২০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। তার কোন লাভ থাকেনি। নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করেছেন কিছু কপি। আর বাকিগুলো খায়াচ্ছেন গরুকে।

একই দশা জেলার বাকি উপজেলাগুলোতেও। ভাল ফলন হলেও লাভের মুখ দেখতে পারছেন না তারা।

কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষক আরিফ হোসেন জানান, ফলন ভাল হওয়ার পর দাম না থাকায় লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের। তাই সরকারিভাবে এ এলাকায় কোল্ডস্টোরেজ নির্মাণ করলে এ লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পেতেন তারা।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ জি এম আব্দুর রউফ বলেন, ‘কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃষকরা পরিমিত সারের ব্যবহার, সেচ প্রদান, চাষাবাদ করে বাঁধাকপির ভাল ফলন পেয়েছে। কিন্তু দামটা কিছুটা কম।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর