চরাঞ্চলে বাহন হিসেবে জনপ্রিয় হচ্ছে মোটরসাইকেল

টাঙ্গাইল, দেশের খবর

অভিজিৎ ঘোষ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, টাঙ্গাইল, বার্তা২৪.কম | 2023-08-12 12:41:16

শুষ্ক মৌসুমে চরের মানুষের যানবাহন হিসেবে ব্যবহার করে মোটর সাইকেল, সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ও ঘোড়ার গাড়ি। তবে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মোটর সাইকেল। চরাঞ্চলে রাস্তা নেই বললেই চলে। কিন্তু তার পরেও ধু ধু বালু চরে মোটরসাইকেল চালিয়ে সংসার চালিয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছে কয়েকশত পরিবার।

সরেজমিনে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আফজালপুর, ভূঞাপুর উপজেলার নিকরাইল, গাবসারা ও অর্জূনা ইউনিয়নের চরাঞ্চলে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।

চর ও নদী এলাকার যেসব গ্রামে শুষ্ক মৌসুমে মাইলের পর মাইল হেঁটে যাতায়াত করতে হতো। চরের মানুষের উৎপাদিত পণ্য আনা নেওয়া করতে হতো পায়ে হেঁটে। সেই সব জায়গায় ঘোড়ার গাড়ির পাশাপাশি মোটরসাইকেল ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সায় যাতায়াত করতে পারছেন চরের মানুষজন।

জানা গেছে, এক সময় যমুনা নদীতে চলতো বড় বড় কয়লা বোঝাই স্টিমার, জাহাজ, লঞ্চসহ অন্যান্য নৌ পরিবহন। কিন্তু কালের বির্বতনে প্রমত্তা যমুনা তার যৌবন হারিয়ে এখন মৃতপ্রায়। নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে একদিকে যেমন বাস্তুহারা করছে চরের মানুষকে অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে মরা খালে পরিণত হচ্ছে।

তবে স্থানীয় অনেক প্রবীণ লোকজন জানিয়েছে, ১৯৯৬ সালের আগেও প্রতি বারেই যমুনায় পূর্ণ যৌবন ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের পর যমুনা নদীতে আস্তে আস্তে তেজ কমে গেছে। দীর্ঘকাল ধরে নদী শাসন না হওয়ায় গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে শুষ্ক মৌসুমে ধু ধু বালু চরে রূপ নিয়েছে।

ভূঞাপুর উপজেলার দুইটি ইউনিয়নের চরাঞ্চলে প্রায় অর্ধ-লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। কমিউনিটি সেন্টার, স্কুল, এনজিও প্রতিষ্ঠানসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত লোকজন প্রতিদিন চরে যাতায়াত করেন। এসব মানুষও কেউ মোটরসাইকেলে, কেউবা সিএনজি চালিত অটোরিক্সাতে যাতায়াত করেন চরের মধ্যে। তবে এখনও অনেক মানুষ পায়ে হেঁটেই বিশাল চর পাড়ি দিচ্ছেন।

চরাঞ্চলে যাতায়াত ব্যবস্থা সহজতর করেছে মোটরসাইকেল। একটি সাইকেলে তিনজন করেও লোক উঠিয়ে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। ঘন বা বেশি বালুর মধ্যে খড় বিছিয়ে মোটর সাইকেল চলাচলের উপযোগী করেছে। চরের মানুষজন অস্থায়ী ঘাটে নৌকা থেকে নেমে মোটর সাইকেলে চরে বাড়ি যাচ্ছেন।

এলাকা ভেদে সাইকেলের চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে মাথাপিছু টাকা আদায় করছেন। তবে চালকরা বেশি টাকা নিলেও তেমন দর কষাকষি করেন না যাত্রীরা।

গাবসারার রুলীপাড়ার মোটরসাইকেল চালক মোকলেছ জানান, ‘সংসারে তার তিন সন্তান রয়েছে। মোটর সাইকেল চালানো তার পেশা। আগে তিনি ইটভাটায় কাজ করেছেন। এখন তিনি প্রতিদিন সাইকেল চালিয়ে ১০ থেকে ১২ শত টাকা আয় করেন।

চন্দীপুর ঘাটে কথা হয় সিএনজি চালক জামালের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গ্যাস ভরে সকালে নৌকাযোগে সিএনজি যমুনা নদী পাড় করি। সারাদিন চরের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করে সন্ধ্যায় আবার চলে যাই শহরে গ্যাস নিতে। ইনকাম ভাল হলেও গাড়ির কিছুটা ক্ষতি হয়। কারণ চরে গাড়ি চালালে গাড়িতে তো প্রেসার পড়ে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর