অর্পিত সম্পত্তি হাতিয়ে নিচ্ছে ভূমিদস্যুরা

চুয়াডাঙ্গা, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, চুয়াডাঙ্গা, বার্তা২৪ | 2023-08-12 22:15:17

চুয়াডাঙ্গায় হাজার হাজার বিঘা সরকারি অর্পিত সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ভূমিদস্যুদের সংঘবদ্ধ একটি চক্র। অভিযোগ রয়েছে, জাল দলিল তৈরি করে সরকারের আওতাধীন জেলার বহু পুরাতন অর্পিত সম্পত্তি হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রটি। বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়াই এই চক্রটির মূল লক্ষ্য।

সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের মামলা করে তারা রাতারাতি হয়ে যাচ্ছে এসব সম্পত্তির মালিক। আদালতের বারান্দা আর সুশীল সমাজের কাছে বিচার দিয়েও মিলছে না কোন সুবিচার। ভূমিদস্যুদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র তাদের প্রতিদিনই চালাচ্ছে উচ্ছেদ আতঙ্ক।

জেলা প্রশাসন বলছে চুয়াডাঙ্গায় হাজার হাজার বিঘা সরকারি অর্পিত সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে মশিউর রহমান হ্যাকা সহ ভূমিদস্যুদের সংঘবদ্ধ একটি চক্র।

অভিযোগ রয়েছে, জাল দলিল তৈরি করে সরকারি আওতাধীন জেলার বহু পুরাতন অর্পিত সম্পত্তি হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রটি। বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ায় এই চক্রটির মূল লক্ষ্য। জাল দলিলের উপর ভিত্তি করে ইতিমধ্যে জেলার বেশ কয়েকটি মূল্যবান অর্পিত সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন তারা। চক্রটি এতই শক্তিশালী যে তাদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা সরকারের কাছ থেকে লিজ নেওয়া সাধারণ ব্যবসায়ীরাও।

সরকারি সম্পত্তির পাশাপাশি ওই চক্রটির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না অর্পিত সম্পত্তির পাশে থাকা ব্যক্তিগত সম্পদের মালিকরাও। তাদেরই একজন বড় বাজার পাড়ার বাসিন্দা অরুন চক্রবর্ত্তী। ভূমিদস্যুর চক্রটি জাল দলিল করে সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ায় একমাত্র মাথা গোজার ঠাই হারাতে বসে এখন হতাশ হয়ে পড়েছে হতদরিদ্র এই পরিবারের সদস্যরা।

ভুক্তভোগী চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার কাপড়ের ব্যবসায়ী শফি উদ্দিন জানান, স্বাধীনতা মুক্তিযোদ্ধার আগে বড় বাজারের বড় ব্যবসায়ী মতিরাম আগর আওয়ালার ভারতে চলে যাবার পর তার এই বসতবাড়িটি সরকার জব্দ করে লীজ দেয়। দীর্ঘ চল্লিশ বছর পর আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীরা জানতে পেরেছি আদালত এই সম্পত্তি জেলার চিহ্নিত ভূমিদস্যু মশিউর রহমান হ্যাকার পক্ষে রায় দিয়েছে। এতে আমরা ব্যবসায়ীরা খুবই মর্মাহত।

বড় বাজারের আরেক ব্যবসায়ী কানাই লাল বলেন, আমরা বলছি না এই সম্পত্তির মালিক আমরা। এই সম্পত্তি সরকারের। আর তাই অবিলম্বে আমরা ভূমিদস্যু মশিউর রহমান হ্যাকার শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।

এদিকে চক্রটির প্রধান অভিযুক্ত মশিউর রহমান হ্যাকা তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সম্পত্তিগুলো তাদের পূর্বে ক্রয়কৃত। তাই তিনি এখন সম্পত্তিগুলোর বর্তমান মালিক হতে চান।

এদিকে, ভূমিদস্যুরা সরকারি জমি জাল দলিল করে হাতিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করলেন জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস। তিনি বলছেন, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে আছেন তারা।

চিহ্নিত এসব ভুমিদস্যুদের অর্থ যোগানদাতা ও পর্দার আড়ালে শক্তি হিসেবে যারা কাজ করছে তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর