নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অজ্ঞানকারী ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অভাবে প্রায় এক যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে সিজারিয়ান অপারেশন। ফলে এখানে গর্ভবতী মায়েরা প্রসবকালীন জরুরি ও জটিল সময়ে সেবা না পেয়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শেখ তালাত মাহমুদ পিন্টু জানান, ৫০ শয্যার সরকারি এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজার অপারেশনের জন্য অপারেশন থিয়েটার ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সবই রয়েছে। কিন্তু এখানে প্রায় একযুগ ধরে নেই অজ্ঞানকারী ডাক্তার। এছাড়া ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল থেকে নেই গাইনি বিশেষজ্ঞ। এ দুই বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় হাসপাতালটিতে প্রায় এক যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে মায়েদের প্রসবকালীন জটিল ও জরুরি সেবা সিজার অপারেশন। তবে একযুগ পূর্বে এখানে নিয়মিত ওই অপারেশন হতো বলেও জানান তিনি।
কলমাকান্দার বিশরপাশা গ্রামের বাসিন্দা আলাল মিয়া জানান, সম্প্রতি তার গর্ভবতী স্ত্রীকে প্রসবকালীন অবস্থায় সিজারের জন্য এ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সরকারি হাসপাতালটিতে সিজারের ব্যবস্থা না থাকায় তাদের যেতে হয়েছে প্রাইভেট ক্লিনিকে।
উপজেলা সদরের বাসিন্দা একরাম হোসেন জানান, প্রাইভেট ক্লিনিকে একটি সিজার অপারেশন করতে খরচ হয় কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা। যা অনেকের পক্ষে নির্বাহ করা অসম্ভব।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আল-মামুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, হাসপাতালে সিজার অপারেশনের জন্য অজ্ঞানকারী ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার চেয়ে নেত্রকোনা সিভিল সার্জনকে নিয়মিত ভাবেই জানানো হচ্ছে। কিন্তু ডাক্তার পাওয়া যাচ্ছে না।
নেত্রকোনার সিভিল সার্জন ডা. তাজুল ইসলাম খান জানান, আগে জরুরি প্রসূতি সেবা কার্যক্রমের আওতায় কলমাকান্দায় সিজার অপারেশন হতো। এখন অজ্ঞানকারী ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের স্বল্পতা রয়েছে। তাই এসব ডাক্তারের পোস্টিং আপতত এখানে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা-১ আসনের সংসদ সদস্য মানু মজুমদার জানান, স্বাস্থ্যখাত হচ্ছে বর্তমান সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার ভিত্তিক একটি খাত। তাই স্বল্প সময়ের মধ্যেই কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সংকট নিরসনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।