ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না গ্রামে চাষ হচ্ছে ভারতের কাশ্মীর জাতের আপেল কুল (বড়ই)। প্রথম আবাদ করে ফলন ভালো হওয়ায় লাভের আশা করছে চাষিরা। নতুন জাতের এ কুল নজর কেড়েছে অন্য চাষিদের।
ভারত থেকে কাশ্মীরি জাতের কুল গাছের কচি ডগা এনে এর চাষ করেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না গ্রামের তিন ভাই আনিসুর রহমান, রবিউল ইসলাম ও আলাউদ্দিন আহমেদ।
চাষি আনিসুর রহমাম জানান, ইন্টারনেটে ছবি দেখে তারা কাশ্মীর জাতের আপেল কুল সম্পর্কে জানাতে পারেন। এরপর ভাতিজাকে পাসপোর্ট করিয়ে ভারতে পাঠান। ভারতের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ থানার চৌবাড়িয়া গ্রামে এ কুলের সন্ধান পান। সেখান থেকে কাশ্মীরি আপেল কুল গাছের আড়াই হাজার কচি ডগা কিনে আনেন।
এ ডগা এনে দেশি কুল গাছের সঙ্গে কলম করে চারা তৈরি করা হয়। গত বছরের জ্যৈষ্ঠ মাসে চারাগুলো জমিতে রোপণ করেন। তিন ভাইয়ের ৭ বিঘা জমিতে চারা লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে আগাম লাগানো সাড়ে তিন বিঘার গাছে কুল ধরেছে।
সরেজমিনে কুল বাগান ঘুরে দেখা যায়, বাগান জুড়ে গাছগুলো কুলে পরিপূর্ণ। কুলের ভারে ডাল নুয়ে পড়েছে। এ জাতের কুল বাউ কুলের চেয়ে আকারে বড়। দেখতে অনেকটা আপেলের মতো। একেকটি গাছে ৩০ কেজি থেকে এক মণ কুল ধরেছে। প্রতিটি কুলের ওজন ৫০ গ্রাম থেকে ৮০ গ্রাম। কয়েক দিনের মধ্যে কুল পাকতে শুরু করবে। নতুন জাতের কুল অন্য জাতের কুলের চেয়ে মিষ্টি ও ভালো স্বাদের।
এদিকে ইতোমধ্যে কুলের ব্যাপারীও আসতে শুরু করেছে। তিন বিঘা বাগানের কুল ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দামে বিক্রি করেছেন বলে জানিয়েছেন আনিসুর রহমান। বাকি জমির কুল বিক্রি করতে ঢাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা বলেছে প্রতি কেজি কুলের দাম একশ টাকার বেশি হবে। এ জাতের কুল দেখতে প্রতিদিন লোক আসছে। তারা চারা কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করছে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দেশে এ জাতের কুল প্রথম আবাদ হচ্ছে। এটি একটি সম্ভাবনাময় ফসল। কুল আবাদ করতে কৃষক আনিসুর রহমান, রবিউল ইসলাম ও আলাউদ্দিন আহমেদকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হচ্ছে।