ঘাঘট নদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ

গাইবান্ধা, দেশের খবর

তোফায়েল হোসেন জাকির,ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাইবান্ধা, বার্তা২৪ | 2023-09-01 09:02:19

মৎস্য প্রেমী আঙ্গুর মিয়া। মাছই যার নেশা ও পেশা। গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার পুরান লক্ষীপুর ঘাঘট নদীর তীরে দ্বীপ এলাকায় আঙ্গুর মিয়ার বসবাস। জীবিকার তাগিদে টাঙ্গাইল জেলায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো আঙ্গুর মিয়া। সেখানে যমুনা নদে দেখতে পান ভাসমান খাঁচা পদ্ধতি মাছচাষ। জানতে পারেন এ পদ্ধতি মাছ চাষ অনেকটাই লাভজনক। ওই অনুকরণ কাজে লাগানোর চেষ্টায় বছর দুয়েক আগে তার বাড়ি সংলগ্ন ঘাঘট নদীতে একটি ভাসমান খাঁচা তৈরী করে প্রাথমিক ভাবে মাছচাষ করেন। এ পদ্ধতিতে মাছচাষ করে লাভবান হন আঙ্গুর মিয়া।

এ নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ করেন। এর ফলে সাদুল্লাপুর উপজেলা মৎস্য বিভাগের কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নেন। এরপর মৎস্য বিভাগের ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্যচাষ প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণ প্রকল্প (২য়) এর আওতায় ঘাঘট নদীর ওইস্থানের অন্যান্য ২০ জন মাছচাষী নিয়ে একটি গ্রুপ তৈরি করা হয়। মাছচাষের উপকরণ বাবদ এ গ্রুপে দেয়া হয় এককালীন ২ লক্ষ টাকা।

গ্রুপ লিডার আব্দুল ছাত্তার মিয়া বলেন, ‘সেই মৎস্য প্রেমি আঙ্গুর মিয়াকে অনুকরণ করে নদীর এমন অংশ যেখানে একমুখী প্রবাহ কিংবা জোয়ার ভাটার শান্ত প্রবাহ বিদ্যমান এমন স্থানে ১০টি খাঁচা স্থাপন করা হয়েছে।  প্রতিটি খাঁচা ৩০ ফুট লম্বা, ১৫ ফুট প্রস্থ।’

ছাত্তার মিয়া বলেন, ‘ঘাঘট নদের মধ্যস্থানের পানিতে বাঁশ ও ফিল্টার নেটজাল দিয়ে ওই আবদ্ধ খাঁচা তৈরি করা হয়। পানির গভীরে ১০ ফুট নেটজাল ঝুলিয়ে পুরো খাঁচাটি আবদ্ধ করা হয়েছে। সাদুল্লাপুর উপজেলা মৎস্য বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহন করার পর গত বছর থেকে মনোসেক্স প্রজাতির তেলাপিয়া মাছচাষ করে আসছি।’

তিনি বলেন, ‘মাছের পোনা উন্মুক্ত করা থেকে ৪ মাস খাদ্য দেওয়া হয়। প্রতিটি খাঁচায় ৩৮০ পিস পোনা ছেড়ে দেওয়া হয়ে থাকে। যা ১০টি খাঁচার উৎপাদিত মাছ বিক্রি করে প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকা নীট মুনাফা অর্জন করা সম্ভব হয়। 

সাদুল্লাপুরের মৎস্যচাষ প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণ প্রকল্পের ক্ষেত্র সহকারী মাহামুদ আক্তার মৌসুমী বলেন, ‘ওই গ্রুপের চাষিরা মাছ পালনে যেনো লাভবান হয় এ বিষয়ে তদারকিকরণ অব্যহত রয়েছে।’

সাদুল্যাপুর উপজেলা মৎস কর্মকর্তা সিরাজাম মুনীরা সুমি জানান, ‘সিবিজি খাঁচায় মাছচাষ ফলাফল প্রদর্শনি হিসেবে ওইস্থানে গ্রুপ সদস্যরা যৌথভাবে মাছচাষ করে আসছেন। আমাদের সার্বিক সহযোগিতায় চাষিরা ইতোমধ্যে লাভবান হচ্ছে। এদেরকে অনুকরণ করে অন্য কেউ যদি মাছচাষ করতে চায় তাদেরকেও সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর