মাত্র তিনদিন আগে মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন মিজানুর রহমান রুবেল। সেখানে লেখা ছিল, ‘মন্ত্রী মহোদয়ের উক্তি: মৃত্যু নিশ্চিত, শুধু সময়টাই অনিশ্চিত। তাই প্রয়োজন উপলব্ধি ও অনুধাবন’। অবশেষে তার মৃত্যুই নিশ্চিত হয়ে গেছে। আর তার মৃত্যুর পর স্ক্রিনশট দেওয়া এ লেখাটি আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের ফেসবুকে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) সাড়ে ১১টার দিকে জেলা সড়ক ও জনপথ কার্যালয় এলাকায় পিকআপ ভ্যানের চাপায় স্কুল শিক্ষক রুবেল নিহত হন।
দুর্ঘটনার পর রুবেলের মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। মরদেহ দেখতে গিয়ে তার আত্মীয়-স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতাল এলাকায় শোকের ছায়া পড়ে। চারদিক থেকে কান্নার ধ্বনি বাজতে থাকে। পরে দুপুর ১ টার দিকে হাসপাতাল থেকে তার মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে দুর্ঘটনার পর ঘটনার প্রতিবাদে নিহতের স্বজন ও বিক্ষুব্ধরা ঘটনাস্থলে কিছু সময়ের জন্য সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় দক্ষিণ তেমুহনীতে কয়েকজনকে রাস্তায় শুয়ে ও মিয়া রাস্তার মাথায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করতে দেখা গেছে। পরে পুলিশ বিক্ষুব্ধদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক করে।
রুবেল লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ড লাহারকান্দি এলাকার দ্বীন মোহাম্মদের ছেলে। তিনি দক্ষিণ টুমচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। বিকেল সাড়ে ৪টায় লাহারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নামাজের জানাজা শেষে তার মরদেহ পারিবারিক করবস্থান দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রুবেল মোটরসাইকেলযোগে লক্ষ্মীপুর বাজারের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের সমসেরাবাদ এলাকায় সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে একটি পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তিনি পড়ে যান। এ সময় পিকআপের পেছনের চাকা তার মাথার ওপর দিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। তবে হেলমেট থাকায় মাথাটি একবারে পিষে যায়নি। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, 'খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনার পর থেকেই চালক পলাতক রয়েছে। পিকআপ ভ্যানটি পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে পিকআপটির রেজিস্ট্রেশন নাম্বারসহ কোন কাগজপত্র পাওয়া যায়নি।'
প্রসঙ্গত, লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় গত ৮ দিনে একই পরিবারের ৬জন ও সরকারি কর্মকর্তাসহ ১২ জন নিহত হয়েছেন।