বগুড়ায় মুক্তিপণের দাবিতে অপহৃত ছাত্রকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে গ্রেফতার করেছে অপহরণ চক্রের তিন সদস্যকে। অপহরণকারীদের কবল থেকে উদ্ধারকৃত সাকিবুল ইসলাম বগুড়ার একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ছাত্র।
পুলিশ সূত্র জানায়, বগুড়া শহরের শেরপুর রোডে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি (বিআইআইটি) নামে বেসরকারি পলিটেকনিক এর ছাত্র সাকিবুল শনিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে পরীক্ষা শেষে রিকশা যোগে স্টেডিয়ামে যাচ্ছিলেন খেলা দেখার উদ্দেশ্যে। শহরের খান্দার এলাকায় অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা সাকিবুলকে চাকু দেখিয়ে অপহরণ করেন। এরপর মোবাইল ফোনে তার বাবার কাছে এক লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেন। পরে সাকিবুলের বাবা বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার দামরুল গ্রামের রফিকুল ইসলামকে ছেলেকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পেতে অপহরণকারীদেরকে বিকাশের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা দেয়। কিন্তু অপহরণকারীরা সাকিবুলকে ফেরত না দিয়ে আরও টাকা দাবী করে এবং টাকা না পেলে ছেলেকে হত্যা করা হবে বলে রফিকুলকে জানায়।
শনিবার রাতে রফিকুল ইসলাম বিষয়টি বগুড়া সদর থানায় জানায়। এরপর পুলিশ মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে অপহরণকারীদের অবস্থান সনাক্ত করে। কিন্তু অপহরণকারীরা বার বার সাকিবুলকে নিয়ে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকে। একপর্যায় শনিবার গভীর রাতে শহরের খান্দার এলাকার একটি বাড়ি থেকে অপহৃত সাকিবুল ইসলামকে উদ্ধার করা হয়। সেই সঙ্গে অপহরণের ঘটনায় জড়িত খান্দার চাপড়পাড়ার আবুল কালামের ছেলে রেজাউল ইসলাম ওরফে রিয়াদ(২৪), মালগ্রাম দক্ষিণপাড়ার ওয়াদুদ সরকারের ছেলে ওয়াহেদ ফারুকী ওরফে মেঘ (১৯) ও মালগ্রাম চাপড়পাড়ার ইদ্রিস আলীর ছেলে মোহাম্মদ সাজিবকে (২৫) গ্রেফতার করে পুলিশ।
অপহৃত সাকিবুল উদ্ধারের কাজে নেতৃত্বদানকারী পুলিশ কর্মকর্তা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা বার্তা২৪কে বলেন, পুলিশ অপহরণকারীদের অবস্থান সনাক্ত করার পরে তারা সাকিবুলকে নিয়ে একটি জঙ্গলে অবস্থান নেন। এরপর বিকাশে টাকা দেয়ার আশ্বাস পেলে অপহরণকারীরা তাকে একটি বাড়িতে নিয়ে যায় এবং অপর এক অপহরণকারী বিকাশে টাকা নিতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।
রোববার (২৭জানুয়ারি) দুপুরে বগুড়া সদর থানায় এ ব্যাপারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) বদিউজ্জামান বার্তা২৪কে বলেন, গ্রেফতারকৃতরা সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের সদস্য। গ্রাম থেকে শহরে লেখাপড়া করে আসা ছাত্রদেরকে তারা টার্গেট করে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করে থাকে। এর আগে তারা একাধিক অপহরণের সাথে জড়িত ছিল। তাদেরকে এর আগেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলা হয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের হয়েছে উল্লেখ করে ওসি বলেন, ওই ঘটনায় আরও কারা জড়িত সেই বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।