চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় দাওয়াত পায়নি নবাগত সাংসদ সাংবাদিক শফিকুর রহমান। সভার শুরুতে সমর্থকদের মাঝে মারামারি সৃষ্টি হয়। পরে দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়।
এ সময় সাবেক সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভুঁইয়ার গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। পুলিশ রাবের বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গুরুতর আহতরা ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলা বিআরডিবি কার্যালয় সম্মুখে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহবুব আলম সোহাগ বলেন, সকালে বিআরডিবি কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের বার্ধিত সভা শুরু হয়। সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল খায়ের পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার, সাবেক সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভুঁইয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাড. জাহিদুল ইসলাম রোমানসহ উপজেলা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, সভার শেষ পর্যায়ে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাহিদুর রহমান বক্তব্য দিচ্ছিল। এ সময় বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুর রহমানের সমর্থকরা একটি মিছিল নিয়ে বর্ধিতসভায় প্রবেশ করে সবাইকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। একপর্যয়ে বর্ধিতসভা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ওইসময় সাবেক এমপি শামসুল হক ভূঁইয়ার গাড়িসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে বর্তমান সাংসদ শফিকুর রহমানের সমর্থকরা।
ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে টিআরসেল নিক্ষেপ করা হয়। পুলিশ কয়েক রাউন্ট রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
পুলিশের গুলিতে আহতরা হলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ, জেলা পরিষদের সদস্য সাইফুল ইসলাম রিপন, ছাত্রলীগ নেতা রিপন, এ্যাড. মাহবুবুল আলম, শরিফসহ ১০জন। গুলিবিদ্ধ আহতদের ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংসদ সদস্য সাংবাদিক শফিকুর রহমানের এক সমর্থক জানান, বর্ধিত সভায় চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযুদ্ধা সাংবাদিক শফিকুর রহমানকে দাওয়াত না দেয়ায় তার সমর্থকরা বর্ধিতসভায় বাধা প্রদান করে। এতে সাবেক সংসদ সদস্য ড. শামসুল হক ভূইয়ার কর্মী সমর্থকরা তাদের উপর হামলা করে।
চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল বলেন, সংঘর্ষের কারণ আমার জানা নেই। তবে আজকে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সাবেক এমপি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া জানান, যে ঘটনাটি ঘটেছে তা আওয়ামী লীগের জন্য লজ্জাজনক। এর চাইতে বেশি কিছু আমি বলতে পারবো না।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) জিহাদুল কবির পিপিএম বলেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা চলছিলো। সভায় বর্তমান সাংসদ শফিকুর রহমানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ওই কারণে তার সমর্থকরা সভা স্থলে গিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হয়। পুলিশ উভয় পক্ষকে নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।