কত বয়স হলে ভাতা পাবেন কান্দুরা বেওয়া?

গাইবান্ধা, দেশের খবর

তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাইবান্ধা, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 23:02:10

কান্দুরা বেওয়া, প্রকৃত বয়স প্রায় ৮৫ বছর। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অনুযায়ী তার বয়স ৭১ বছর। এই বয়সেও তাকে ভিক্ষা করে খাবারের সন্ধান করতে হয়। বৃহস্পতিবার বিকালে (৩১ জানুয়ারি) গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার একটি গ্রামে লাঠিতে ভর দিয়ে ভিক্ষা করছিলেন কান্দুরা বেওয়া। এসময় এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় তার।

কান্দুরা বেওয়া বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘মোর শরিল (শরীর) আর চলে না বাহে। ট্যাকা-পসার অভাবে অসুক (রোগ) হলেও অসুধ (ওষুধ) কিনে খাতে (খেতে) পাম (পারি) না। মোর একনা বেটা ছাওয়াল তামারও সংসার চলে না, বাবা। বউ নিয়্যা বালুগাঁও কাম করে খায়। অসুক শরিল নিয়ে মুই আর ভিক্ষাও করতে পাম না। মোর একনা (একটা) ভাতা কাট (কার্ড) করি দেও বাহে। তোমার বেটা-বেটির জন্নে আল্লার কাছে দোয়া করিম।’

গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার ৪নং জামালপুর ইউনিয়নের বুজরুক রসুলপুর গ্রামের (পিরোজপুর) মৃত মহির উদ্দিনের স্ত্রী কান্দুরা বেওয়া। শতবর্ষী এই নারীর ভাগ্যে আজও জোটেনি বয়স্ক ভাতা কিংবা বিধবা ভাতা কার্ড। ফলে নানা অভাব-অনটনের মধ্য দিয়েই খেয়ে-না খেয়ে বেঁচে আছেন তিনি। শেষ বয়সে একটি ভাতা কার্ডের প্রত্যাশা করেন তিনি।

জানা গেছে, কান্দুরা বেওয়ার শরীরে নানা অসুখে বাসা বেঁধেছে। ওষুধ কেনার সামর্থ্যও নেই। সেই সাথে অর্থ সংকটে দু’বেলা খাবার জোটে না তার। ১৫ বছর আগেই স্বামী মহির উদ্দিরকে হারিয়ে বিধবা হয়েছেন তিনি। সেই থেকে ছেলে ও মেয়েদের নিয়ে নিরন্তর সংগ্রাম করে চলেছেন। যদিও মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। আর ছেলে বাইরে দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন। নিজের আয় দিয়ে সংসারই চালাতে পারে না ছেলে।

কান্দুরা বেওয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘বিধবা ও বয়স্ক ভাতা কার্ডের জন্য জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছে দুই বছর ধরে ঘুরেছি, কিন্তু কাজ হয়নি। কেউ আমার কথা শোনে না।’

তবে জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান মণ্ডল বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘বৃদ্ধা কান্দুরা বেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর