পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বার্তা২৪.কমে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগীদের সেবা বৃদ্ধিসহ হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতায় নেমেছেন স্টাফরা।
শুক্রবার (০১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের ৪০/৪৫ জন স্টাফ পরিচ্ছন্নতা কাজ শুরু করেন। বিকেল পর্যন্ত চলা এ পরিচ্ছন্নতা কাজে বিভিন্ন ওয়ার্ডের দেয়াল ও মেঝে পরিষ্কার করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা ময়লা অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। হাসপাতালের বিছানার কাপড়গুলোও ধৌত করা হয়েছে।
জানা যায়, জেলার ২০ লক্ষাধিক মানুষের নির্ভরশীলতার প্রতীক ‘হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল’। অথচ ‘হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল’ নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, রোগীর শয্যা, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও প্রয়োজনীয় উপকরণ সংকটের বিষয়টি চরম আকার ধারণ করে। এছাড়া হাসপাতালে অবিবেচক মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ, মাদকসেবী ও দালালদের দৌরাত্ম্য লাগামহীন হয়ে পড়ে। সিটগুলো এতই অকেজো যে, দাঁড় করানো হয়েছে ‘ইটের পায়ে’। মহিলা মেডিসিন ও সার্জারি ওয়ার্ডে ‘বাঁশের টুকরো’ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ‘স্যালাইন স্ট্যান্ড’। পুরো হাসপাতাল জুড়েই রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট। হাসপাতালের অভ্যন্তরে স্থাপিত নলকূপটি তুলে নেয়া হয়েছে অজ্ঞাত কারণে। সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য স্থাপিত পানির ফোয়ারাটি বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত। ভাঙ্গা-ছোড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডের টয়লেটের দরজা। এতে করে বিপাক-বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে মহিলা রোগীদের। শয্যা সংকট থাকায় বহু রোগীকে দিনের পর দিন থাকতে হচ্ছে মেঝেতে। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের ড্রেনগুলোতে পড়ে আছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। যে কারণে দুর্গন্ধ ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) বার্তা২৪.কমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার দিনভর এই পরিচ্ছন্নতা কাজ চলে। এছাড়া সেবার মানও পূর্বেও তুলনায় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের ওয়ার্ড চীফ মো. আব্দুল কাইয়ুম জানান- রোগীদের সেবার মান বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ধুয়া মুছা করা হয়েছে।
তিনি বলেন- নিয়মিত এভাবেই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল। হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রতিদিন বেশ কয়েকজন স্টাফ নিয়োজিত থাকবে।
হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের আরএমও ডা. মিঠুন রায় বলেন- সরকারি হাসপাতালে প্রতি মানুষ সব সময় নির্ভরশীল। তাই রোগীদের সেবায় সব সময় হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল অন্যরমক ভূমিকা পালন করে।
তিনি বলেন- তাই রোগীদের সেবার মান বৃদ্ধিসহ হাসপাতালের পরিবেশ পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে সকাল থেকে আমি নিজে উপস্থিত থেকে পরিচ্ছন্নতা কাজ করেছি। আশা করি এরপর থেকে রোগীদের সেবা বা হাসপাতালের পরিবেশ নিয়ে আর কোন অভিযোগ থাকবে না।