দুই বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতা আমজাদ হোসেন রাব্বির সঙ্গে পরিচয় হয় নওগাঁর এক গৃহবধূর। এরপর তাদের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অবশেষে রাব্বিকে বিয়ে করতে কমলনগর ছুটে আসে ওই গৃহবধূ। কিন্তু বিয়ে না করে রাব্বি পালিয়ে যাওয়ায় গৃহবধূ ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। রাব্বি লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের ছেলে।
রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ওই গৃহবধূর সঙ্গে কথা বলে এসব কথা জানা গেছে।
এর আগে শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে স্থানীয়রা অসুস্থ গৃহবধূকে কমলনগরের তোরাবগঞ্জ বাজার থেকে উদ্ধার করে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে গৃহবধূর সঙ্গে কথা বলাসহ অভিযুক্তকে আটক করতে অভিযান চালায় পুলিশ।
অভিযুক্ত রাব্বি উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক ও তোরাবগঞ্জ গ্রামের আবুল কাসেমের ছেলে। গৃহবধূ নওগাঁ জেলার বদলগাছি থানার রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দুই সন্তানের জননী।
গৃহবধূর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই বছর আগে গৃহবধূর সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে রাব্বির পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রাব্বি নওগাঁয় বেশ কয়েকবার আসা-যাওয়া করেছে। গৃহবধূও লক্ষ্মীপুরে একাধিকবার আসেন। তারা বিভিন্ন স্থানে গিয়ে রাতযাপনও করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) বিয়ে করবে বলে তাকে কমলনগরের তোরাবগঞ্জে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু রাব্বি বিয়ে না করে পালিয়ে যায়। এতে গৃহবধূ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তোরাবগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসাধীন ওই গৃহবধূ জানান, ৮ বছর আগে তার বিয়ে হয়। কম বয়স ও ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে দেওয়ায় স্বামীর সংসারে সুখী হতে পারেননি। দুই বছর আগে রাব্বির সঙ্গে পরিচয় হয়। গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ের আশ্বাসে রাব্বির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও গড়ে উঠে।
তিনি আরও জানান, রাব্বির বিয়ের প্রলোভনে পড়ে ৮ মাস আগে স্বামী ও দুই সন্তান রেখে বাবার বাড়িতে চলে যান তিনি। রাব্বি নওগাঁ গিয়ে তার সঙ্গে দুই-একদিন থেকে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে চলে আসত। কয়েকদিন আগে বিয়ে করার আশ্বাস দিলে কমলনগর তোরাবগঞ্জ গ্রামে আসেন তিনি। কিন্তু তাকে একরাত রেখেই ফের নওগাঁ চলে যেতে হুমকি দেয় রাব্বি। তাদের সম্পর্কের বেশকিছু তথ্য প্রমাণ থাকায় রাব্বি তার মোবাইলফোনটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার রেজাউল করিম রাজিব জানান, গৃহবধূ মানসিকভাবে অসুস্থ। তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কমলনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়েছি। রাব্বির বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’