অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সন্তানকে হত্যা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বার্তা২৪.কম | 2023-08-11 22:40:54

দুই মাস আগে শিশু হালিমা খাতুনের মা খাদিজা বেগমকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছিল তার বখাটে দেবর হেলাল মিয়া। এতে রাজি না হয়ে পরিবারকে বিষয়টি জানিয়েছিল খাদিজা। এর জন্য শাস্তি পেতে হয়েছিল হেলালকে। আর এর প্রতিশোধ নিতেই ভাতিজি, তিন বছরের শিশু হালিমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে হেলাল।

হালিমা হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়ে যাওয়া চাঞ্চল্যকর এমন তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনার বিবরণ দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, ভাবি খাদিজাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে পারিবারিকভাবে শাস্তি পেয়ে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে পড়ে হেলাল। প্রতিশোধ নিতে কয়েকবার খাদিজার মেয়ে হালিমাকে খুন করার জন্য সুযোগ খোঁজে। এর মধ্যে কয়েকবার পারিবারিক কাজকর্ম নিয়ে ঝগড়া-বিবাদও হয় হেলালের সাথে।

গত শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাড়ির সামনে বসে দাদা ফরিদ মিয়ার কিনে দেয়া পরোটা খাচ্ছিল হালিমা। এ সময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী চিপসের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে নিয়ে যায় চাচা হেলাল। বাড়ির পাশে ডাবলু কমিশনারের বাড়ির নির্জন স্থানে হালিমাকে নিয়ে যায় সে। পরে দুই বাড়ির মাঝামাঝি স্থানে সহযোগী রুবেল ও হেলাল শিশু হালিমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

এদিকে পরিবারের লোকজন হালিমাকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। নিখোঁজের খবর মাইকিংয়ের মাধ্যমে এলাকায় প্রচার করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর হেলালের সহযোগী রুবেল হালিমার পরিবারকে জানায়, তাদের বাড়ি থেকে ৫০০ গজ দূরে দুই ভবনের মধ্যবর্তী স্থানে হালিমার লাশ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন গিয়ে হালিমার লাশ শনাক্ত করে।

মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, ঘটনার পর পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হলে হেলালকে সন্দেহ হয়। পরে তাকে ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে হালিমাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে সে। তার দেয়া তথ্যমতে রুবেলকেও আটক করা হয়। সেও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

এই ঘটনায় নিহতের মা খাদিজা বেগম বাদী হয়ে এই দুইজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল করিম, অতিরিক্ত পুলিম সুপার হেডকোয়ার্টার) আবু সাঈদ, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জিয়াউল হক।

উল্লেখ্য, গত শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা শহরের ভাদুঘর ভূঁইয়াপাড়া এলাকায় বাড়ির পাশ থেকে হালিমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে ওই এলাকার আমির হোসেনের মেয়ে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর