ঝালকাঠিতে এক সময় বছরে কেবল মাত্র দুই মাস পেয়ারা পাওয়া যেত। এখন এখানে থাই জাতের পেয়ারা সারা বছরই পাওয়া যায়। খেতে অনেক সুস্বাদু ও ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ হওয়ায় এই পেয়ারা সবার পছন্দ।
ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক কামাল হোসেন, প্রভাষক গোলাম মর্তুজা ও তাদের দুই বন্ধু সাবেক ছাত্রনেতা লস্কর আশিকুর রহমান দিপু ও আইনজীবী সোহেল আকন মিলে প্রায় ১৯ একর জমির উপরে তৈরি করেছেন এই থাই জাতের পেয়ারার বাগান। বাগান তৈরি করতে এ পর্যন্ত প্রায় ৪৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে তাদের।
এদিকে ওই বাগান থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার পেয়ারা বিক্রি করা হচ্ছে। ঝালকাঠি জেলার চাহিদা মিটিয়ে তা পাঠানো হচ্ছে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন স্থানে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বছর দুইয়ের মধ্যে এই বাগান থেকে প্রায় কোটি টাকার পেয়ারা বিক্রি করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, মাত্র দুই বছর আগে ঝালকাঠি সদর উপজেলার শেখেরহাট ইউনিয়নের গাবখান নদীর তীরবর্তী শিরযুগ বিআইডব্লিউটিএর ১৫ একর জমি লিজ নিয়ে এবং বিনয়কাঠি ইউনিয়নের মানপাশা এলাকায় নিজেদের ৪ একর জমিতে থাই জাতের পেয়ারা চাষের প্রকল্প শুরু করেন তারা। বর্তমানে তাদের বাগানে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন শ্রমিক কাজ করছে।
পেয়ারা বাগানে কাজ করা সোহরফ হোসেন বলেন, ‘আমরা এখানে প্রায় ৪০ জন লোক বিভিন্ন রকমের কাজ করি। পেয়ারা পারা থেকে শুরু করে ক্ষেত পরিচর্যা করতে আমাদের ব্যস্ত থাকতে হয়। এই বাগানের প্রতিটি পেয়ারার ওজন হয় প্রায় এক কেজি করে। আর এই পেয়ারা বাগান থেকে ৮০ থকে ৮৫ টাকা কেজি দরে কিনে নিচ্ছে পাইকাররা।’
পাইকার রব হাওলাদার বলেন, ‘এখানের পেয়ারা স্বাদে খুব ভালো, তাই ক্রেতাদের এর প্রতি আগ্রহ বেশি। আমরা এই পেয়ারা নিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করি। এতে আমাদের লাভ ভালো হয়।’
প্রভাষক কামাল হোসেন জানান, নাটোরের একটি পেয়ারা বাগান দেখে এগুলো চাষ করার উৎসাহ জাগে তাদের। এরপর ৪ বন্ধু মিলে থাই পেয়ারার বাগান করেন।
ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ফজলুল হক জানান, আস্তে আস্তে থাই পেয়ারার আবাদ আরও সম্প্রসারিত হবে। ঝালকাঠিতে ছোট বড় বিভিন্ন ফলের বাগান তৈরি হচ্ছে। শিক্ষিত যুব সমাজ এ ফলের বাগান তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে।