প্যারাবন কেটে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার মাছের ঘের

কক্সবাজার, দেশের খবর

মুহিববুল্লাহ মুহিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কক্সবাজার, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 15:24:59

কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী উপকূলে প্যারাবন কেটে মাছের ঘের তৈরি করছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জিয়াবুল হক। এ কাজে বাধা দিলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছেন তিনি। অথচ মাছের ঘেরের কারণে বর্ষায় চরম হুমকির মুখে পড়বে বেড়িবাঁধ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার চৌফলদন্ডীর মাঝেরপাড়া উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধের কিনারায় প্যারাবন কেটে মাছের ঘের তৈরি করছেন ওই এলাকার মনির আহমদের ছেলে জিয়াবুল হক। কক্সবাজার সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের এমন কর্মকাণ্ডে হতাশ স্থানীয়রা। তবে নিজেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা দাবি করলেও অনেকেই জানান তিনি কোনো পদে নেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একাধিক মামলার আসামি জিয়াবুল। জেলার শীর্ষ কয়েকজন নেতার ছত্রছায়ায় বিভিন্ন অপরাধ মূলক কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। এর মধ্যে প্রায় সরকারের ৫০ একর খাস জমি দখল করে প্যারাবন কেটে মাছের ঘের তৈরি করা একটি।

এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে বেশ কয়েকবার ওই মাছের ঘেরে অভিযান পরিচালনা করে বনবিভাগ। কিন্তু জিয়াবুলের দাপটে তা কোনো কাজে আসেনি।

কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, 'বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫'-এর আওতায় ১৯৯৯ সালে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সোনাদিয়া দ্বীপ, মহেশখালী ও এর পাশের মৌজাকে সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে। ইসিএর জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য পরিবেশ অধিদফতর ও এর সহযোগী সংস্থা নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (নেকম) ও সুখী বাংলা ফাউন্ডেশন (এসবিএফ) কাজ করছে। আর এ প্রকল্পের মাধ্যমে সোনাদিয়া দ্বীপ ও আশপাশের ম্যানগ্রোভ সংরক্ষণ ও সৃজন, বালিয়াড়ির উদ্ভিদ সংরক্ষণ ও সৃজন, সামুদ্রিক কাছিম সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নির্ভরশীল দরিদ্র ও হতদরিদ্র মানুষ নিয়ে দল গঠন ও তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রদান এবং বিভিন্ন সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে উপকূলীয় জীববৈচিত্র সংরক্ষণ করছে। আর ইসিএর প্যারাবন নিধন করে অবৈধ চিংড়ির ঘের নির্মাণ ও পরিবেশ নষ্ট করলে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০)-এর ৫(১) ও ৫(৪) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে জানা যায়।

কক্সবাজার উপকূলীয় বন বিভাগের গোরকঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ বার্তা২৪.কমকে জানান, প্যারাবন নিধন করে নতুন করে চিংড়ির ঘেরের বাঁধ নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে ভূমিদস্যু জিয়াবুল হকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগ বনবিভাগও পেয়েছে। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোবাইলে কক্সবাজার সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও ভূমিদস্যু জিয়াবুল হক বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ওই জমি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর। আমি শুধু ঘের নির্মাণ করছি।’

প্যারাবন কেটে কেন মাছের ঘের নির্মাণ করছেন জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। আপনার সঙ্গে কাল দেখা করব বলে ফোন কেটে দেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর