কান্তনগর-মীরপুর সড়কটি এখন মরণফাঁদ

গাইবান্ধা, দেশের খবর

তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাইবান্ধা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 06:51:36

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সংস্কার ও মেরামত না করায় মানুষের মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ কান্তনগর-মীরপুর। দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক পথে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই সড়কটি।

কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলায় প্রায় ৯ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য খানা খন্দে ভরে গেছে। ফলে সর্বসাধারণের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

ভূক্তভোগীরা জানায়, ওই এলাকার বিশাল জনগোষ্ঠী সড়ক পথে রাজধানী ঢাকা, রংপুর জেলাসহ গাইবান্ধা ও উপজেলা শহর সাদুল্লাপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকেন। এছাড়া প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে হাজার হাজার পথচারী এবং কোমলমতি স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরা চলাচল করে থাকে। বর্তমানে সড়কটির অধিকাংশ স্থানে কার্পেটিং ও খোয়া উঠে গিয়ে বিশাল বিশাল গতের্র সৃষ্টি হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে সড়কটি দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচল করা অনেকটা দুষ্কর হয়ে পড়ছে। অনেক পথচারী ও শিক্ষার্থী খাদে পড়ে রক্তাত্ত জখম হয়েছেন। এ অবস্থায় সড়কটি এখন কারও জন্যই নিরাপদ নয় বলে স্থানীয়রা জানান।

ভূক্তভোগীরা আরও জানায়, জনগুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ততম এ সড়ক দিয়ে রাতে মাইক্রেবাস, সিএনজি, অটোবাইক, ব্যাটারি চালিত ভ্যান, মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলসহ নানা ধরনের হালকা ও ভারী যানবাহন ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে। তবুও প্রয়োজনের তাগিদে নিরূপায় হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব যানবাহনে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা। প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট খাটো দুর্ঘটনা।

ভ্যান চালক সজিব মিয়া, মজনু মিয়া ও নুরুন্নবী প্রধান বলেন, অনেক যাত্রী তার গন্তব্যস্থলে তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে আমাদেরকে দ্রুত গাড়ি চালাতে বলেন। এ অবস্থার মধ্যে জোরে ভ্যান চালালেই যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানো সম্ভব হয় না। এ নিয়ে প্রায়ই যাত্রীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়।
মাইক্রোবাস চালক শুমন চন্দ্র বলেন, ‘কান্তনগর থেকে মীরপুর পৌঁছাতে আগে ১২ থেকে ১৫ মিনিটের বেশি সময় লাগতো না। কিন্তু বর্তমানে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ভাঙা থাকায় গাড়ি স্বাভাবিক গতিতে চালানো সম্ভব হয় না। ফলে এখন প্রায় ২৫ থেকে ৩০মিনিট সময় লাগছে।’

সিএনজি সবুজ মিয়া ও কামরুল ইসলাম জানান, সড়কটি অতি চিকন ও বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের কারণে অনেক কষ্ট করে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। তারপরও কোনো সময় গাড়ি একটু গর্তে পড়লে ঝাঁকুনিতে যাত্রীরা আমাদের ওপর ভীষণ ক্ষেপে উঠেন। এছাড়া সড়কটির নাজুক পরিস্থিতিতে বিশেষ করে মুমূর্ষু কোনো রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিতে গেলে অসহনীয় ঝাঁকুনিতে রোগীর আরও অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।

কলেজ ছাত্রী রুবাইয়া জাহান রিপা জানায়, বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কটি উপর সৃষ্ট খাদে হাটু পানি জমে। ফলে জোবদ্ধতায় সড়কটি দিয়ে চলাচল আরও যেন দুরূহ হয়ে পড়ে। সড়কটির এমন দুরাবস্থার বিষয়টি এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জেনেও তারা এ ব্যাপারে কোনো রকম কার্যকরী ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমরা হতাশ হয়ে পড়েছি।

এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মাজহারুল ইসলাম জানান, সড়কটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট তাগাদা পত্র দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন সাপেক্ষে বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর