বাসা বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে অধীনস্তদের নামে, আর তাতে বসবাস করছেন কর্মকর্তা। এ যেন নামে আছে, কাজে নেই অবস্থা হয়েছে! এছাড়া নিজে কাজ না করে অন্যদের দিয়ে চালিয়ে দিচ্ছেন পশুর চিকিৎসা। খোঁজ খবর রাখেন না খামারিদের। দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকায় জড়িয়ে পড়েছেন নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে।
স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে কাউকেই কেয়ার করেন না। বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হয়নি বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। এভাবেই চলছেন নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. কাজী মুস্তাইন বিল্লাহ।
ডা. কাজী মুস্তাইন বিল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কচুবাড়িয়া গ্রামের খামারি মো. হায়দার বলেন, ‘আমি ৩৫টা গাভী পালন করি। গাভীর কোনো অসুখ হলে ডা. কাজী মুস্তাইন বিল্লাহ সাহেবকে বললে তিনি নিজে না এসে কম্পাউন্ডার ও ড্রেসারদের পাঠান। এ কারণে এখন গরুর অসুখ হলে যশোর থেকে ডাক্তার এনে চিকিৎসা করাই।’
দাসেরডাঙ্গা গ্রামের খামারি বাবলু মিয়া বলেন, ‘লোহাগড়া পশু হাসপাতালের ডাক্তার আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন না। হাসপাতালে গরু নিয়ে গেলে ডাক্তার সাহেব না দেখে কম্পাউন্ডারদের দিয়ে দেখান।’
গন্ধবাড়িয়া গ্রামের ফারুক মোল্যা বলেন, ‘লোহাগড়া পশু হাসপাতালে আমরা গরুর ভালো চিকিৎসা পাই না। আমরা যারা প্রকৃত গরুর খামারি তাদের সঙ্গে ডাক্তার কাজী মুস্তাইন বিল্লাহর কোনো সম্পর্ক নাই। আর যারা খামারি না তাদের সঙ্গে ওনার দহরম মহরম সম্পর্ক।’
পাচুড়িয়া গ্রামের খামারি ইকবাল শেখ জানান, ডা. কাজী মুস্তাইন বিল্লাহ কম্পাউন্ডার ও ড্রেসারদের সরিয়ে দিয়ে অবৈধভাবে হাসপাতালের ২য় তলায় আবাসিক হিসেবে বসবাস করছেন।
লোহাগড়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. কাজী মুস্তাইন বিল্লাহ তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাকে এখান থেকে সরানোর জন্য এসব চক্রান্ত।’
হাসপাতালের ২য় তলায় থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বিভাগীয় কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে থাকি। ৩ জন কম্পাউন্ডার ও ড্রেসারদের নামে বরাদ্দ থাকা ওই বাসায় নিয়মিত ভাড়াও পরিশোধ করি।’
কোন বিভাগীয় কর্মকর্তা অনুমতি দিয়েছেন এবং কোন কোন কম্পাউন্ডার ও ড্রেসারদের নামে বরাদ্দ হয়েছে জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
লোহাগড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মুকুল কুমার মৈত্র বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’