অভাবকে গুডবাই জানিয়েছেন আলমগীর

গাইবান্ধা, দেশের খবর

তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাইবান্ধা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 00:22:57

আখের রস বিক্রেতা হলেন আলমগীর হোসেন। বয়স ৩৫ বছর। স্ত্রী মেহেরুন বেগমসহ তিন সন্তান নিয়ে তার সুখের সংসার। যদিও এক সময় সংসারে অভাব ছিল। তবে সেই অভাবকে গুডবাই জানাতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।

আলমগীর হোসেন গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ভগবানপুর গ্রামের মৃত খবির উদ্দিনের ছেলে।

শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সাদুল্লাপুর পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরের সামনে মেশিনে আখ মাড়াই করে রস বিক্রি করতে দেখা যায় আলমগীরকে। এ সময় তিনি জানান, বগুড়া, রংপুর কিংবা স্থানীয় ভাবে আখ সংগ্রহ করা হয়। পরে স্ত্রী মেহেরুন সেগুলোকে পরিষ্কার করেন। এরপর তিনি বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জ ও হাটে-বাজরে গিয়ে মেশিনে সেই আখগুলোকে মাড়াই করে রস বিক্রি করেন। প্রতি গ্লাস রসের দাম ১০ টাকা। প্রতিদিন তার প্রায় ২০০ গ্লাস রস বিক্রি হয়। এতে তার লাভ থাকে প্রায় ৬০০ টাকা।

জানা গেছে, কয়েক বছর আগে অভাবে পড়ে জীবিকার তাগিদে স্ত্রী-সন্তানদের ফেলে রেখে ঢাকায় রিকশা চালিয়ে রোজগার করতেন আলমগীর হোসেন। তবে শারীরিক সমস্যার কারণে এ কাজটি দীর্ঘদিন করতে পারেননি তিনি। ফলে বাধ্য হয়ে নিজ এলাকায় ফিরতে হয় তাকে। পরে তিনি সিদ্ধান্ত নেন আখের রস বিক্রি করবেন।

কিন্তু আখের রস বিক্রির মেশিনসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি কিনতে প্রায় সোয়া লাখ টাকার প্রয়োজন হয়। তাৎক্ষণিক চরম হতাশ হয়ে পড়লেও মনোবল হারাননি তিনি। পরে গৃহপালিত গাভী, ছাগল ও স্থানীয় গ্রামীণ ব্যাংক শাখা হতে ঋণ নেন আলমগীর। এরপর যাবতীয় সরঞ্জামাদি কিনে শুরু করেন ভ্রাম্যমাণ ভাবে আখের রস বিক্রির ব্যবসা। এর মাত্র দুই বছরের মাথায় দরিদ্রতাকে গুডবাই জানিয়েছেন আলমগীর।

আখের রস খেতে আসা শাহজাহান আলী জানান, আখের রসের ভেষজগুণ, পুষ্টিমান এবং স্বাদের কারণে এর চাহিদা এবং জনপ্রিয়তা অন্য যেকোনো কমল পানীয়ের চেয়ে অনেক বেশি। এছাড়াও জন্ডিস জনিত রোগে আখের রস অনেকটা ঔষধি ‍হিসেবেও কাজ করে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর