কলাপাড়া উপজেলার ধানখালীতে এক হাজার একর জমির উপর নির্মিত হচ্ছে ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড (বিসিপিসিএল) এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে। প্রথম পর্যায়ে ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ শেষ হলে ২য় পর্যায়ে আরো একটি ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ৫০ মেগাওয়াটের একটি বায়ু বিদুৎ কেন্দ্র নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। সব মিলিয়ে বিসিপিসিএল মোট ২৬৯০ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন করবে।
পটুয়াখালী পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য চীন থেকে সংগ্রহ করা চারটি গ্র্যাব শিপ আনলোডার পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জেটিতে স্থাপন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সরাসরি জাহাজ থেকে কয়লা খালাস করে কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে প্লান্টের কয়লা জমা রাখার ডোমে পৌঁছে দেয়ার যাবে। অপরদিকে এটিই প্রথম কোন বিদেশি জাহাজ যা পায়রা বন্দরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে সরাসরি পণ্য খালাস করছে।
পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা খালাস করতে নিজস্ব অর্থায়নে ৩৮৫ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ২৪ মিটার প্রস্থ একটি জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। এই জেটিতে একই সাথে দুটি জাহাজ থেকে কয়লা খালাস করা যাবে। আর খালাস করা কয়লা সরাসরি কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে প্লান্টে পৌঁছে যাবে। এ জন্য শিপ থেকে কয়লা আনলোড করতে ৩২ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৪৮ মিটার উচ্চতার চারটি গ্র্যাব শিপ আনলোডার সংগ্রহ করা হয়েছে। যা জেটিতে স্থাপন করা হবে। প্রত্যেকটি আনলোডার ঘণ্টায় ৮০০ টন করে কয়লা খালাস করতে পারবে।
পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী রোজোয়ান ইকবাল খান জানান, গত ৫ ফেব্রুয়ারি চীনা জাহাজ ‘শিনচেন ওশান’ এই চারটি শিপ আনলোডার নিয়ে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে ভেরে। এটিই প্রথম কোন বিদেশি জাহাজ যা জেটিতে সরাসরি পণ্য খালাস করছে। বর্তমানে পায়রা বন্দরের রামনাবাদ চ্যানেলে ৭.৫ মিটার নাব্যতা থাকলেও ৬ মিটার নাব্যতা নিয়ে জেটিতে আসে জাহাজটি। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানালেন, পাওয়ার প্লান্টের আর্থায়নে নির্মিত এই জেটিতে সুপারম্যাক্স, প্যানাম্যাক্স সাইজের জাহাজ থেকেও কয়লা খালাস করা সম্ভব হবে। এতে করে কয়লা পরিবহনের ব্যয় যেমন কমবে পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচও কমবে বলেও জানান তিনি।
পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী পিন্টু রহমান জানান, এ বছরের আগস্টে প্রথম ইউনিটের ৬২০ মেগাওয়াট এবং ডিসেম্বরে ২য় ইউনিটের ৬২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার জন্য এখন দেশী-বিদেশি প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক দিন-রাত কাজ করছেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং চীনের রাষ্ট্রপতি যৌথভাবে ২০১৬ সালে ১৪ অক্টোবর পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। এ বছরের আগস্টে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসবে। এর ফলে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে ৬২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।