ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন অংশে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় বাড়ছে লাশের মিছিল। এই দুটি সড়ক এখন যেন মৃত্যুফাঁদ। চলতি বছর এই দুই সড়কে দুর্ঘটনায় মারা গেছেন অন্তত ১৫ জন। এসব সড়ক দুর্ঘটনায় একদিকে যেমন প্রানহানী ও পঙ্গুত্ব সংখ্যা বাড়ছে, তেমনি সম্পদেরও ক্ষতি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বেপরোয়া গতি, ওভারটেকিং, অদক্ষতা সড়কের বিভিন্ন স্থানে বিপদজনক বাঁক, যত্রতত্র ফিটনেস বিহীন যান চলাচল ও সরকার নিষিদ্ধ থ্রি হুইলারের কারণে মহাসড়কে বাড়ছে দুর্ঘটনা। তবে এটা কমাতে চালকদের সচেতন করার কোনো বিকল্প নেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা সিলেট মহাসড়কের ৭৭ কিলোমিটারে প্রতিদিন ছোট-বড় ১২/১৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে। ফলে এই অংশে গত কয়েক বছরে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে কয়েকগুণ। বৃহত্তর চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ ছাড়াও ৪০টি জেলার অর্ধ লাখ যাত্রী এই রুটে যাতায়াত করেন।
সংশ্লিষ্টদের মতে, ২০১৮ সালে এই দু’টি সড়কে দুর্ঘটনায় ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বাস্তবে এ সংখ্যা আরও বেশি। গত ২৩ জানুয়ারি কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের সদর উপজেলার সুহিলপুরে বাস-ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার ধাক্কায় ২ জন, ১৯ জানুয়ারি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিজয়নগরে শশই এলাকায় বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন এবং ১৫ জানুয়ারি একই মহাসড়কে বীরপাশা এলাকার বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ৫ জন প্রাণ হারান।
মহাসড়কে চলাচলকারী ইউনিক পরিবহনের যাত্রী মো. ইউসুফ মিয়া বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘বাধ্য হয়েই এই সড়কে চলতে হয়। মূলত ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকা সড়কের জন্য অনেক দুর্ঘটনা ঘটছে। এ জন্য সড়কগুলো ওয়ান ওয়ে করলে দুর্ঘটনার প্রবণতা অনেকটাই কমবে।’
মামুন পরিবহনের ড্রাইভার সাহাবুদ্দিন বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘বিভিন্ন সময় সিএনজি চালিত অটোরিকশা সামনে চলে আসে। হঠাৎ ব্রেক চাপার কারণে আমরা বাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি না। থ্রি হুইলার বন্ধ করা হলে রাস্তায় দুর্ঘটনা অনেকটাই কমে যাবে।’
সরাইল খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হোসেন সরকার বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘চালকরা সচেতন না হলে কোনোভাবেই দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয়। সিএনজি চালিত অটোরিকশা মহাসড়কে চলাচল সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধ করতে প্রতিদিন অভিযান চালানো হচ্ছে। চালক ও পথচারীরা সচেতন হলে দুর্ঘটনা অনেক কমে যাবে।’