থামছে না খুকিমাই বেওয়ার বোবা কান্না!

গাইবান্ধা, দেশের খবর

তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাইবান্ধা, বার্তা২৪ | 2023-08-24 16:27:34

বাকপ্রতিবন্ধী খুকিমাই বেওয়া। বয়স প্রায় ৬৬ বছর। প্রতিদিন খাবারের সন্ধানে ভিক্ষাবৃত্তি করতে হয় তাকে। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও তার কপালে এখনও জোটেনি সরকারি সহায়তা ভাতা কার্ড।

খুকিমাই বেওয়া সরকারি সুযোগ সুবিধার বাইরে আছেন দিনের পর দিন। তার সাথে কথা বলার পর ঘুরেফিরে একটি প্রশ্নই উঁকি দিচ্ছে বিধবা বা প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড পেতে কতো বছর লাগে?

বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ছান্দিয়াপুর গ্রামে লাঠিতে ভর দিয়ে ভিক্ষা করছিলেন খুকিমাই বেওয়া। এসময় বোবা বাকপ্রতিবন্ধী খুকিমাই বেওয়া চোখের কান্না বুঝিয়ে দেয় খুকি বেওয়া কতটা অসহায়। ইশারা-ইঙ্গিত দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন একটি ভাতা কার্ড চান তিনি।

বয়স্ক ভাতার কার্ড কেন পাননি জানতে চাইলে খুকিমাই বেওয়ার ছেলে আব্দুস ছালাম বলেন, চেয়ারম্যান-মেম্বররা কেউ কিছু দেয় না। একটি ভাতা কার্ডের জন্য অনেকবার ঘোরাঘুরি করেছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। শুধু বয়স্ক ভাতার একটি কার্ডই নয় সরকারি সাহায্যের কিছুই পৌঁছায়নি তার ঘরে। এমন পরিস্থিতিতে ছেলেদের অভাবের সংসারে অনেকটা অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটে এই বৃদ্ধার। দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য তিনি একটি কার্ড চান।

খুকিমাই বেওয়ার স্বামী আনছার আলী প্রায় ১৫ বছর আগে মারা যান। এর পরই বিধবা জীবনে সন্তানদের নিয়ে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে আসছেন তিনি। খুকিমাই বেওয়ার তার বড় ছেলে আব্দুস ছালাম এর বাড়িতে থাকেন। বাসযোগ্য জমি না থাকায় কয়েক বছর আগে ছান্দিয়াপুর ভাটির ছড়ার বাধ সংলগ্ন শতক খানেক জমি কিনে বসতবাড়ি করেন। বাড়ি তো নয়, যেন কুড়ে ঘর। বর্তমানে খুকিমাই বেওয়ার শরীরে নানা অসুখে বাসা বাধার কারণে আর ভিক্ষা করতে পারেননা।  দাঁড়িয়ে থাকলে যেন গোটা শরীর থর-থর করে কাঁপে। শেষ বয়সে একটি ভাতা কার্ডের আকুতি জানান তিনি।

সাদুল্লাপুরের রসুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল করিম দুলা বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু করার নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাদ্দ অপ্রতুল। খুকিমাইকে ইউএনও অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর