আত্মসমর্পণ করছে দেড় শতাধিক ইয়াবা ব্যবসায়ী

কক্সবাজার, দেশের খবর

শাহরিয়ার হাসান ও মুহিববুল্লাহ মুহিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম | 2023-08-15 22:30:31

মাদক রাজ্যখ্যাত দেশের দক্ষিণের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ। সরকারের মাদক বিরোধী অভিযানেরমুখে আত্মসমর্পণ করতে চাচ্ছে দেড় শতাধিক ইয়াবা কারবারী। আর এরমধ্য দিয়ে বিষাক্ত ইয়াবারগ্রাস থেকে মুক্তি মিলছে এ উপজেলার মানুষের।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মিয়ানমার থেকে আসে ইয়াবা ট্যাবলেট নামে মাদকটি। সীমান্ত দিয়ে টেকনাফে আসার পর তা ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। দিন দিন এ মরণনেশা ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়ছিল দেশের যুবসমাজ। এক পর্যায়ে মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানের ঘোষণা দেয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ অভিযানেরমুখে আত্মসমর্পণে রাজি হয় দেড় শতাধিক ইয়াবা ব্যবসায়ী।

আগামী শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টায় টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজন করা হচ্ছে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশ মহা-পরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী।

এরই মধ্যে দেড় শতাধিক তালিকাভুক্ত ও চিহ্নিত ইয়াবা চোরাকারবারি আত্মসমর্পণের জন্য কক্সবাজারের বিশেষ একটি স্থানে নিজেদের উদ্যোগে নিরাপদ হেফাজতে জড়ো হয়েছে বলে বার্তা২৪.কম-কে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন।

তবে ঠিক কতজন আত্মসমর্পণের জন্য নিরাপদ হেফাজতে এসেছেন এবং কি কি শর্তে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ দেওয়া হবে ‘কৌশলগত কারণে’ তা প্রকাশ করতে রাজি হননি কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন।

মাদক বিরোধী অভিযানে কয়েকজন গোলাগুলিতে নিহত হলেও বন্ধ করা যাচ্ছিল না ইয়াবার বিস্তার। আত্মসমর্পণের মধ্যদিয়ে ইয়াবার বিস্তার অনেক অংশে কমে আসবে বলে মনে করেন বিশিষ্টজনরা।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কক্সবাজার শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'যদি ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আত্মসমর্পণ করে তাহলে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। এর পরই মূলত ইয়াবারগ্রাস থেকে মুক্তি পাবে টেকনাফের মানুষ। অন্যথায় তা আলোরমুখ নাও দেখতে পারে।'

কক্সবাজার পিপলস ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'এ আত্মসমর্পণের মাধ্যমে অন্তত নিঃশ্বাস নিতে পারবে সাধারণ মানুষ। তারপরও প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে হবে। সীমান্ত বন্ধ করতে হবে। আত্মসমর্পণকারীদের প্রশাসনের নজরে রাখতে হবে। আশা করছি এ প্রক্রিয়াটি আলোরমুখ দেখবে।'

উল্লেখ্য যে, ইয়াবা পাচারকারী হিসেবে চিহ্নিত ১ হাজার ১৫১ জন কক্সবাজারের। তাদের মধ্যে শীর্ষ ইয়াবা চোরাকারবারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ৭৩ জনকে। ওই তালিকায় আছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদি ও তার পাঁচ ভাই আব্দুর শুক্কুর, আব্দুল আমিন, মুজিবুর রহমান, মোহাম্মদ শফিক ও মোহাম্মদ ফয়সাল, ভাগ্নে সাহেদুর রহমান নিপু, বেয়াই শাহেদ কামাল ও ফুফাত ভাই কামরুল হাসান রাসেলের নামও ওই তালিকায় ছিল বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। যদিও বার বার তা অস্বীকার করে যাচ্ছেন আব্দুর রহমান বদি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর