সড়ক না করেই সেতু নির্মাণ!

টাঙ্গাইল, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, টাঙ্গাইল | 2023-08-31 05:07:38

সাতটি গ্রামের হাজার মানুষের চলাচলের দুর্ভোগ কমাতে নির্মাণ করা হয়েছে সেতু। কিন্তু গত দেড় বছরেও সেতুটির দুই পাশে চলাচলের রাস্তা তৈরি না করায়, সেতুটি কোন কাজেই আসছে না। উল্টো নতুন করে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া গ্রামের মানুষদের পায়ে হাঁটার রাস্তাটি পুরো বর্ষা মৌসুম জুড়ে পানিতেই ডুবে থাকে। সরেজমিনে গিয়ে এমনটাই দেখা যায়।

এমন অবস্থার ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের আলোকদিয়া, আন্দিবাড়ি, পানান, পাইশানা ও ভাদ্রা ইউনিয়নের কোদালিয়া, সিংদাইর, খাগুরিয়াসহ আশে পাশের বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে।

এলাকাবাসী জানান, আশেপাশের প্রায় ৭টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের উপজেলা সদরে আসার জন্য টাঙ্গাইল-আরিচা আঞ্চলিক মহাসড়কের নাগরপুর উপজেলার ভালকুটিয়া পাকার মাথা থেকে একটি পাকা রাস্তা ও নোয়াই নদীর উপর একটি সেতুর প্রয়োজন ছিল। নোয়াই নদীর উপর সেতুটি নির্মিত হলেও দুর্ভোগ কমেনি। সংযোগ সড়ক নির্মিত না হওয়ায় তাদের বর্তমানে ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। সেতু নির্মিত হলেও ব্রিজ ব্যবহার করতে পারছে না এলাকার মানুষ। তার উপর তাদের যে পায়ে হাঁটার রাস্তা রয়েছে সেটিও বর্ষা মৌসুমে পানিতে ডুবে থাকে।

উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ভালকুটিয়া থেকে আলোকদিয়া যাওয়ার পথে নোয়াই নদীর উপর ৭২.৬ মিটার সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। মের্সাস দাস ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ১ বছর পর ২০১৭ সালে নির্মাণ কাজ শেষ করে।

সেতু নির্মাণের পর সেতুর দুপাশে ২০০ মিটার করে মাটি ভরাট করার কথা থাকলেও মাটি ভরাট করা হয়নি। চলাচলের বিকল্প কোন রাস্তা না থাকায় সেতুর নিচ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এলাকাবাসী।

রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী চন্দনা আক্তার জানান, আগে ব্রিজ ছিল না, তখন যেভাবে নৌকায় ও কাপড় ভিজিয়ে রাস্তা পার হয়ে হয়েছে, ব্রিজ নির্মাণের পরও অবস্থা একই রয়ে গেছে।

নাগরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ ওয়ার্ডের সদস্য মো. আলম হোসেন বার্তা২৪.কমকে জানান, এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি ছিল সেতু। কিন্তু সেতু নির্মিত হলেও এর কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তা না থাকায় রোগী, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের যাতায়াত দুরূহ হয়ে পড়েছে। মাটি ভরাটের কাজ নিয়ে এলাকাবাসী ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জটিলতা তৈরি হয়। তারা অন্যের জমিতে বাংলা ড্রেজার লাগিয়ে বালু তুলতে গেলে জমির মালিক বাধা দেয়। এরপর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মাটি ভরাট না করেই চলে যায়।

নাগরপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহীনুর আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘মামলা জটিলতার কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করতে পারেনি। নতুন করে মাটি ভরাটের জন্য টেন্ডার আহবান করা হবে। আর পাকা রাস্তা থেকে সেতু পর্যন্ত একটি রাস্তার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে’।

এ সম্পর্কিত আরও খবর