হবিগঞ্জে বিজিবি ক্যাম্পে মাটি ভরাটকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসী ও বিজিবি সদস্যদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ধুলিয়াখাল বাইপাস এলাকায় বিজিবির নির্মাণাধীন ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসীর দাবি, ২০১৮ সালের প্রথম দিকে ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে ধুলিয়াখাল বাইপাস এলাকায় বিশাল জায়গা নিয়ে বিজিবি ক্যাম্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ভূমি অধিগ্রহণের সময় বিজিবি ক্যাম্পের সব ধরনের কাজ স্থানীয় ঠিকাদার ও শ্রমিকদের দিয়ে করানোর কথা হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে বাইরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে কাজ করাতে থাকে। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয়দের সাথে ক্যাম্পের কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্যদের বিরোধ চলে আসছে।
শুক্রবার বিকালে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে স্থানীয় লোকজন ক্যাম্পের ভেতরে কাজ করতে গেলে বিজিবি সদস্যরা বাধা দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
বিজিবি সদস্যরা বলছেন, বিভিন্ন কাজ স্থানীয়দের দিয়েই করানো হচ্ছে। কয়েকটি কাজ বাইরের ঠিকাদারদের দিয়ে করানো হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় কয়েকজন সুবিধাবাদী লোক বিষয়টি নিয়ে এলাবাসীকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছেন। শুক্রবার বিকেলে ওই লোকজনসহ কয়েকজন শ্রমিক কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই ক্যাম্পের ভেতরে ঢুকে মাটি কাটতে শুরু করে। এ সময় তাদের নিষেধ করলে তারা চলে যায়। পরে, বিজিবি সদস্যরা গ্রামবাসীর উপর হামলা করেছে বলে মাইকে অপপ্রচার শুরু করে তারা। এ নিয়ে গ্রামবাসী বিজিবি ক্যাম্পের সামনে এসে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণের সময় স্থানীয় ঠিকাদার ও শ্রমিকদের দিয়ে সব ধরনের কাজ করার কথা থাকলেও বিজিবি তার ব্যতিক্রম করছে। আজ বিজিবির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্থানীয় লোকজন মাটি কাটার কাজ করতে গেলে বিজিবি সদস্যরা তাদের উপর চড়াও হয়।’
এ ব্যাপারে বিজিবির নির্মাণাধীন ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা হাবিলদার আনুয়ার হোসেন বলেন, ‘অনুমতি না নিয়েই স্থানীয় কয়েকজন সুবিধাবাদী লোক ক্যাম্পের ভেতরে প্রবেশ করে মাটি কাটতে শুরু করে। এ সময় তাদের নিষেধ করলে তারা চলে যায়। পরে তারা বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে। এ নিয়ে গ্রামবাসী বিজিবি ক্যাম্পের সামনে এসে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে।
এদিকে, ঘটনার পর খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম ও হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুর রহমানসহ প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। এছাড়া পুনরায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।