হারিয়ে যাচ্ছে গোপালগঞ্জের ইমিটেশনের পণ্য

গোপালগঞ্জ, দেশের খবর

মাসুদুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গোপালগঞ্জ | 2023-08-26 12:35:49

পাকিস্তান আমল থেকেই গোপালগঞ্জ ঐতিহ্যগতভাবে ইমিটেশনের গহনার জন্য বিখ্যাত ছিল। ব্রোঞ্জ ও পিতলের গহনা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করত হাজার হাজার নারী-পুরুষ। আর এসব গহনা কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে জেলার মুকসুদপুরের জলিরপাড়ে গড়ে উঠেছিল বিশাল ব্রোঞ্জ মার্কেট।

কিন্তু উন্নত মালামাল, ডিজাইন ও টেকসইয়ের অভাবে দিন দিন চাহিদা কমে যাচ্ছে এসব গহনার। ফলে বিদেশি উন্নত পণ্যের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে গোপালগঞ্জের তৈরি ইমিটেশন শিল্পের এসব গহনা। তবে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এখানকার কারিগর ও ব্যবসায়ীরা।

ব্রোঞ্জ মার্কেটের এক ব্যবসায়ী উরুদাস শীল বলেন, ‘আমরা ঢাকার জিনজিরা থেকে কেজি প্রতি ৮শ টাকা দরে ব্রোঞ্জ কিনে আনি। এরপর কারিগরদের মাধ্যমে ডাইসে ও হাতে গহনার ডিজাইন করে ৪-৬ ধরনের এসিডের পানিতে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হয়। পরে মেশিন দিয়ে পলিশ ও রঙ করে গহনা তৈরি করা হয়। এখানে হাতের আংটি, চুড়ি, কানের দুল, নাকফুল, কবচ, নুপুর, হাতের বাজু, চেইন, ক্লিপ, ঝুমকা, চুলের কাটাসহ বিভিন্ন ধরনের গহনা তৈরি করা হয়।

তিনি আরও জানান, এসব গহনা আগে আমাদের দেশ ছাড়াও বিদেশের বিভিন্ন জায়গাতে রফতানি করা হতো। এখন তেমন চাহিদা না থাকলেও বিভিন্ন জেলার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এসব পণ্য কিনে নিয়ে যায়।

কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে অনেক চাহিদা থাকায় হাজার হাজার কারিগররা এখানে গহনা তৈরি করত। কিন্তু বর্তমানে এসব গহনার চাহিদা কম। তাই একদিকে যেমন কমে গেছে গহনা তৈরির তৎপরতা, অন্যদিকে ন্যায্য মজুরি না পাওয়ায় কারিগরের সংখ্যাও অনেকটাই কমে গেছে।

ব্রোঞ্জ মার্কেট সমিতির সম্পাদক সুকান্ত তালুকদার বলেন, ‘চীন ও ইন্ডিয়ার মানসম্পন্ন ডিজাইনের গহনা ও সুলভ মূল্যের কারণে আমাদের এখানের তৈরি গহনার চাহিদা কমে গেছে। তাই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে এখানের তৈরি গহনার পাশাপাশি বিদেশি পণ্য এনে বিক্রি করছে অনেকেই।

ব্রোঞ্জ মার্কেট সমিতির সভাপতি মন্টু রায় বলেন, ‘উন্নতমানের মেশিন থাকলে আমরা চাহিদা সম্পন্ন গহনা তৈরি করে বাজারজাত করতে পারব। সরকার আমাদের এ ব্যাপারে সহযোগিতা করলে অবশ্যই এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর