ব্রডগেজ (বড়) লাইনের জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে ৫০টি কোচ আমদানির উদ্যোগ নেয় সরকার। প্রথম পর্বে আমদানিকৃত লাল-সবুজ রঙের কোচের ১৫টি রেল কোচ চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় আনা হয়েছে। পরিবেশ বান্ধব, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, খুব আরামদায়ক আসনসহ এই রেল কোচগুলো ইঞ্জিনের সমন্বয়ে প্রতি মিনিটে আড়াই কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম।
গত এক সপ্তাহ থেকে যান্ত্রিক নিরীক্ষণ এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এসব কোচের খুঁটিনাটি পর্যবেক্ষণ এবং তদারকি করতে এরই মধ্যে ইন্দোনেশীয় ১১ জন বিশেষজ্ঞ এসেছেন। তাদের সঙ্গে নিয়ে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার শ্রমিক ও প্রকৌশলীরা কোচগুলোর হাইড্রলিক ব্রেক ও যান্ত্রিক রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখবেন।
ইতোমধ্যে রেলের পশ্চিমাঞ্চলীয় মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহীদুল ইসলাম ও প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী মৃণাল কান্তি বণিক কোচগুলো পরিদর্শন করেছেন।
অত্যাধুনিক এসব কোচ নির্মাণ করছে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রেলওয়ে ক্যারেজ (কোচ) নির্মাণ প্রতিষ্ঠান পিটি ইন্ডাস্ট্রি কেরেতা এপি (ইনকা)। ব্রডগেজ লাইনের জন্য ৫০টি কোচ আমদানিতে ব্যয় হয় ২১৩ কোটি টাকা।
এসব কোচে প্রথমবার বিমানের মতো বায়ো টয়লেট যুক্ত করা হচ্ছে। এতদিন ট্রেনের টয়লেট থেকে বর্জ্য সরাসরি লাইনের ওপর পড়ত। এখন থেকে প্লেনের মতো বর্জ্য বায়ো টয়লেট পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট স্থানে জমা হবে। পরে এগুলো বিশেষ পদ্ধতিতে সরিয়ে নেওয়া হবে। এতে পরিবেশ ও রেলকোচ দুটোই দূষণমুক্ত থাকবে। ফলে ট্রেনটি হবে পরিবেশবান্ধব।
রেলকোচ গুলোর র্যাক তৈরি করে ট্রায়াল রানে তোলা হবে। মার্চ মাসে ওই কোচগুলো পরীক্ষামূলকভাবে চালানো শুরু হবে। এর মাঝে বাকি ৩৫টি রেলকোচ আনা হবে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়। যাবতীয় নিরীক্ষণ শেষে এ কোচগুলো দিয়ে চালানো হবে আন্তনগর ট্রেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত দেশে যে ৩৩টি আন্তনগর ট্রেন আছে তার মধ্যে একটিতেও এগুলোর মতো অত্যাধুনিক সুবিধা নেই। এ রেলকোচের আসনগুলো খুবই আরামদায়ক এবং রেলকোচ গুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।
সরকার রেলে যুক্ত করার জন্য ব্রডগেজ ও মিটারগেজ উভয় ধরনের কোচ কিনবে। ওই একই প্রতিষ্ঠানে মিটার গেজ (ছোট) লাইনের জন্যও আরও ৫৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০টি মিটারগেজ কোচ নির্মাণ হবে বলে জানিয়েছেন সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) ভারপ্রাপ্ত মো. জয়দুল ইসলাম।