নির্ধারিত সময়ের তিন বছর অতিবাহিত হবার পর নানা জটিলতার অবসান ঘটিয়ে গত ২২ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন পটুয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। তবে হাইকোর্টের নির্দেশে নির্বাচন আবারো স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল। সে অনুযায়ী মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা নির্বাচনের মাঠে প্রচার-প্রচারণাও শুরু করেছিলেন।
তবে হঠাৎ করেই এ নির্বাচন উপলক্ষে ১২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ১৩ ফেব্রুয়ারি পৌরসভা নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। প্রতীক বরাদ্দ এবং প্রচার-প্রচারণা শুরু হবার পর নির্বাচন স্থগিত করার এ ঘটনায় হতাশ প্রার্থী ও ভোটাররা। পৌরবাসীর এখন একটাই প্রশ্ন, কবে হবে নির্বাচন?
জানা গেছে, ১৮৯২ সালে ১ এপ্রিল ২৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে পটুয়াখালী পৌরসভা গঠিত হয়। বর্তমানে এই পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ৪৫,১৭৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২১৮৫১ এবং নারী ভোটার সংখ্যা ২৩,৩২৬ জন। সর্বশেষ ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি পটুয়াখালী পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে ২০১৬ সালে মেয়াদ পূর্তি হলেও সীমানা বর্ধিতকরণ ও মামলা জটিলতায় আটকে যায় নির্বাচন।
তবে গত ২২ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন পটুয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায় পৌরবাসী একে স্বাগত জানায়। উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয় নির্বাচনী ডামাডোল। তফসিল অনুযায়ী ৩১ জানুয়ারি মেয়র পদে ৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। ৩ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। ১০ ফেব্রুয়ারি ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং ১১ ফেব্রুয়ারি মেয়র পদে ৫ জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৩ জন এবং ৪৩ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করেন জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার ও পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার জিয়াউর রহমান খলিফা। তবে ১৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন স্থগিতের খবরে প্রার্থীদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরে।
এদিকে বর্তমান পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরদের অধিকাংশরাই আবারো এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। যার ফলে নির্বাচন না হলেও তারা তাদের পদেই বহাল থাকতে পারছেন। বিষয়টিকে অনেকটা পক্ষপাতিত্ব মূলক আচরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তবে নির্বাচন স্থগিত করার খবরে পৌরবাসীদের পক্ষ থেকে প্রতিদিনই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করা হচ্ছে। ভোটাররা বলছে, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে জবাবদিহিতা তৈরি হয়। গত আট বছর নির্বাচন না হওয়ায় তিন বছর যাবৎ বর্তমান পৌর পরিষদে অনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা দায়িত্ব পালন করছে। তারাই মূলত নির্বাচন যাতে না হয় সে ব্যাপারে কলকাঠি নাড়ছে।
তবে জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার মো. জিয়াউর রহমান খলিফা জানান, বিষয়টি পুরোপুরি আদালতের এখতিয়ার। আদালতের নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। আদালতের অনুমতি পেলে আবারো নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। তবে এখন সকল ধরনের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকবে।