প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি দুটি পাতা একটি কুড়ির দেশ মৌলভীবাজার। এখানে রয়েছে অসংখ্য পর্যটন স্থান। যেখানে প্রতিদিনই দেশি-বিদেশি পর্যটকরা বেড়াতে আসেন।
এই জেলার অন্যতম সৌন্দর্যমণ্ডিত এলাকা কমলগঞ্জে অবস্থিত হাম হাম জলপ্রপাত। কমলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে কমপক্ষে ২৫ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। এখানে যাওয়ার রাস্তাটির উন্নয়ন কাজে কমলগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে চাম্পারায় চা বাগান থেকে কলাবন বস্তি পর্যন্ত ১৮৫০ মিটার কাঁচা রাস্তা পাকাকরণের দরপত্র আহ্বান করা হয়। পরে ২০১৭ সালের শেষ দিকে কাজ শুরু হয়। তবে এখনো এ রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়নি। এর প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ২২ লাখ টাকা।
স্থানীয়রা জানায়, তারা গত দু’বছর ধরে দেখছে রাস্তার কাজ চলছে। কিন্তু দুই বছর যাওয়ার পরও শেষ হয়নি রাস্তার কাজ। তাছাড়া রাস্তার পাকাকরণ কাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার বন্ধ রাখার কথা বললেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা আমলে নিচ্ছে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ রাস্তার উন্নয়ন কাজে ঠিকাদারের লোকজন নরম পরিত্যক্ত ইটের খোয়া ব্যবহার করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই এলাকার কয়েকজন চা শ্রমিক বার্তা২৪.কমকে জানান, এলাকাটি দুর্গম ও উপজেলা সদর থেকে অনেক দূরে। এ এলাকার খবর কেউ রাখতে চায় না। তবে প্রায় ১০-১২ বছর আগে এই এলাকার অদূরে কুরমা সংরক্ষিত গভীর অরণ্যে হাম হাম জলপ্রপাত আবিষ্কৃত হওয়ার পর থেকে এ রাস্তা ব্যবহার শুরু করে দেশি বিদেশি পর্যটকরা। এমনকি জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের লোকজনও এ রাস্তা ব্যবহার করে হাম হাম জলপ্রপাত পরিদর্শন করতে গেলে। এরপর থেকে এ রাস্তার উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
এ বিষয়ে ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হান্নান জানান, এই রাস্তাটি নিম্নমানের করা হচ্ছে। সিডিউল অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না। যদি রাস্তাটিতে ভালোভাবে কাজ করা না হয় তাহলে বর্ষার সময় এটি আবার খানাখন্দে পরিণত হবে। এ বিষয়টি তিনি এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীকে অবহিত করেও কোনো সারা পাননি।
এদিকে রাস্তায় পরিত্যক্ত নরম ইটের খোয়া ব্যবহারের সত্যতা স্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স হাসান এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার মুহিবুর রহমান জয়নাল জানান, আসলে কাজটি হয়েছে তার প্রতিষ্ঠানের নামে। তবে মূলত কাজটি করছেন একজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মামুন ভূঁইয়া জানান, পরিত্যক্ত ও নরম ইটের খোয়া পরিবর্তনের জন্য ঠিকাদারি সংস্থাকে চিঠি দিয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।