কুষ্টিয়ায় শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, চিন্তিত কৃষকরা

কুষ্টিয়া, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, কুষ্টিয়া, বার্তা২৪.কম | 2023-08-22 12:48:08

দক্ষিণের লঘুচাপে কুষ্টিয়ায় প্রচুর শিলাবৃষ্টি হয়েছে। মাঠের গম, মসুরি, রসুন, পেঁয়াজ, পানসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ব্যাপক হারে আমের মুকুলও ঝরেছে। এতে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন কৃষকরা। এছাড়া বেশ কিছু গ্রামের অনেক ঘর-বাড়ির টিনের চালা ফুটো হয়ে গেছে।

রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ভোর থেকে কুষ্টিয়ার মিরপুর, সদর, দৌলতপুর, কুমারখালী উপজেলায় শিলাবৃষ্টি হয়। এতে মাঠে মাঠে গম, ছোলা ও মসুরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি মিরপুর, ভেড়ামারা ও দৌলতপুর উপজেলায় তামাক চাষিদের ক্ষতির পরিমাণটাও ছিল বেশি। এছাড়া প্রচুর শিলাবৃষ্টিতে ঝরে পড়েছে আমের মুকুল।

জেলার সদর ও মিরপুর উপজেলার বেশ কিছু গ্রামের অনেক ঘর-বাড়ির টিনের চালা ফুটো হয়ে গেছে।

মিরপুর উপজেলার শুরশুরি বাজারের আনোয়ার হোসেন জানান, একেকটি শিলের ওজন ছিল-২৫০ গ্রাম থেকে ৫০০ গ্রাম। শিলা বৃষ্টিতে ওই এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়ির টিনের ঘরই ধ্বংস হয়ে গেছে। গাছপালাসহ মাঠে ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

কাকিলাদহ এলাকার মল্লিক পাড়ার কৃষক আবু বক্কর বলেন, ‘এ বছর আমি বর্গা নিয়ে সাড়ে তিন বিঘা জমিতে তামাকের চাষ করেছি। ক্ষেতে তামাকের কাজ প্রায় শেষের দিকে এখন বাড়িতে এনে শুকিয়ে বিক্রি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এরই মধ্যে রাতে প্রচুর শিলাবৃষ্টিতে আমার সব তামাক নষ্ট হয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাড়ে তিন বিঘা জমিতে আমার সব মিলিয়ে খরচ হয়েছিল ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। এ বছর আশা করেছিলাম প্রায় ২ লাখ টাকার তামাক বিক্রি করতে পারব। তবে শিলাবৃষ্টির পর যে অবস্থা দেখছি তাতে আয় তো দূরের কথা, উল্টো ২ হাজার টাকা লাগবে জমি পরিষ্কার করতে।’

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা এলাকার পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নে ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে বাড়িঘর ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

পাটিকাবাড়ি এলাকার আব্দুস সালাম বলেন, ‘শিলাবৃষ্টিতে শুধু পাটিকাবাড়ি গ্রামেই প্রায় শতাধিক পরিবারের ঘরের টিন ফুটো হয়ে গেছে। ইউনিয়নজুড়ে অন্তত ৫০০ বাড়ির টিনের চালা ফুটো হয়ে গেছে। এ ছাড়া মাঠের গম, মসুরি, রসুন, পেঁয়াজ, পানসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ব্যাপক হারে আমের মুকুলও ঝরে গেছে।

বোরো ধানের পাতা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সবচেয়ে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বোরো চাষিরা। মৌসুমের প্রথম ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের ফলস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঋণ পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত রয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে, সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর