জরাজীর্ণ লাইব্রেরি, নেই পাঠকের পদচিহ্নও!

ঝিনাইদহ, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, ঝিনাইদহ, বার্তা ২৪.কম | 2023-08-11 15:50:26

ঝিনাইদহের শৈলকুপা সরকারি ডিগ্রী কলেজের বয়স ৫০ বছর পেরিয়ে গেছে। ১৯৯২ সালে কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই কলেজটিতে লাইব্রেরি থাকলেও নেই কোনো লাইব্রেরিয়ান। তাই তখন থেকেই জোড়াতালি চলছে এটি।

এই লাইব্রেরিতে বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার বই আছে, কিন্তু পাঠক নেই। কলেজের শিক্ষার্থী সংখ্যা আট শতাধিক। কিন্তু গত অর্ধশতাব্দিতে মাত্র ১৫ জন শিক্ষার্থীর নামে বই ইস্যু করা আছে! তবে তারা কবে বই নিয়েছে, তাও জানা নেই দায়িত্বে থাকা উমেদার পিয়নের।

শুধু শৈলকুপা সরকারি ডিগ্রী কলেজ নয়। জেলার বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লাব্রেরিতেই এমন দৃশ্য। স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়ার অভ্যাস নেই বললেই চলে। তাইতো বছরের পর বছর মলাট খোলা হচ্ছে না বইয়ের।

কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরি কক্ষই নেই। যেগুলোর আছে, সেগুলোও জরাজীর্ণ, এলোমেলোভাবে বই রাখা। কালেভদ্রে খোলা হয় লাইব্রেরি কক্ষের তালা। অনেক লাইব্রেরিতে শিক্ষার্থীদের বসার কোনো ব্যবস্থা নেই। কোথাও আবার শিক্ষার্থীদের পা পড়ার চিহ্নটুকুও পাওয়া যায় না।

ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজের কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় লাইব্রেরিগুলোতে সব মিলিয়ে এক লাখের মত বই আছে। ছাত্র সংখ্যা প্রায় ১৬ হাজার। কিন্তু এসব লাইব্রেরিতে আসন সংখ্যা নগণ্য। অনার্স ও মাস্টার্সের কিছু শিক্ষার্থী অ্যাকাডেমিক কিছু বইয়ের জন্য লাইব্রেরিতে যাতায়াত করলেও উচ্চ মাধ্যমিকের কাউকে পাওয়া যায় না সেখানে।

অনার্স পড়ুয়া গালিব হোসেন বলেন, কলেজের লাইব্রেরিতে যে বই আছে তা নেওয়া হয় না, কোনোদিন লাইব্রেরিতে যাইনি।

সরকারি কেসি কলেজের এইচএসসির ছাত্র সাধন চন্দ্র বলেন, আমাদের কলেজে যে লাইব্রেরি আছে তা আমি জানতাই না! তাছাড়া লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়ার সময়ও হয় না।

ভাটই মাধ্যামিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া বলেন, শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরিতে যেতে চায় না। তারা ক্লাস শেষ হলেই মোবাইলে ফেসবুক চালানো নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তাই লাইব্রেরির বই খোলা হয় না।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার সুশান্ত কুমার দেব বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরিগুলোর অবস্থা ভালো নয়। শিক্ষার্থীরা যাতে লাইব্রেরিমুখী হয়, তার উদ্যোগ শিক্ষকদেরই নিতে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর