লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা, কয়লার বদলে পুড়ছে কাঠ

গাইবান্ধা, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাইবান্ধা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 05:58:28

সরকারের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন ইটভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। এখনও অল্প উচ্চতার ড্রামসিটের এবং ইটের চিমনি ব্যবহার হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। ফলে কালো ধোঁয়ায় বিপন্ন হয়ে পড়ছে এলাকার পরিবেশ।

জানা গেছে, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্রের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন ইটভাটা স্থাপনের লাইসেন্স দিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে পরিত্যক্ত অনাবাদি জমি, নিচু জলাশয়ের ধারে, নদীর পাশে এবং কমপক্ষে চারদিকে ১ কিলোমিটার জনশূন্য এলাকায় ইটভাটা স্থাপনের অনুমোদন দেওয়ার কথা। কিন্তু গাইবান্ধার কোনো ইটভাটা মালিকই এসব শর্ত মানছে না।

সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধায় গত ৩ বছরে ২৭টি ইটভাটা মালিককে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৮টি ইটভাটার লাইসেন্সের মেয়াদ রয়েছে। বাকি ৯টির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও ওই ইটভাটা মালিকরা তা আর নবায়ন করেননি।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, এ পর্যন্ত জেলায় ১০১টি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু তাদের কেউই জেলা প্রশাসনের কাছে লাইসেন্স গ্রহণের জন্য এখনো আবেদন করেননি।

এদিকে আয়কর বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, গত বছর তিনি অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছেন জেলার বিভিন্ন স্থানে ১৮৫টি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ড্রামসিটের চিমনির ইটভাটাও রয়েছে কয়েকটি।

তিনি আরও জানান, এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি।


ড্রামসিটের চিমনির ইটভাটা একটি রয়েছে সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামে। প্রায় ৩ একর ফসলি জমি নিয়ে ইটভাটাটি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া পলাশবাড়ি উপজেলাতেও ড্রামসিটের ইটভাটার তথ্য পাওয়া গেছে।

শুধু তাই নয়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন ভাটায় কয়লার পরিবর্তে জ্বালানি হিসেবে কাঠের গুঁড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রকাশ্যে এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও কেউ তা দেখছেন না।

পলাশবাড়ি উপজেলার ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও এফ জে ব্রিকস এর মালিক মুকুল সরকার জানান, এ উপজেলায় প্রায় ৪০টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে লাইসেন্স রয়েছে তার ইটভাটাটিসহ মাত্র দুটির।

কিভাবে লাইসেন্স বিহীন ইটভাটা বছরের পর বছর এভাবে চলতে পারে তা তার জানা নেই।

অপরদিকে জেলা ইটভাটা মালিকের সভাপতি আব্দুল লতিফ হক্কানী জানান, অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপন করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় এ ধরনের ইটভাটার সংখ্যা বাড়ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর