চুয়াডাঙ্গায় আমের বাগানগুলোতে গাছে গাছে সোনালি রঙের মুকুল। গত বছরের মত এবারও চাষীরা আশায় বুক বেঁধেছেন আম ব্যবসায় ভালো সফলতা পাওয়ার। এজন্য বাগানের একটু বাড়তি পরিচর্যা করছেন তারা।
শীতের প্রকোপ এবার কিছুটা কম থাকায় চুয়াডাঙ্গার বাগানগুলোতে বেশ আগেভাগেই এসেছে আমের মুকুল। জেলার চারটি উপজেলায় আম বাগানগুলোতে এখন ভরা মুকুলের মোহময় ঘ্রাণ। গাছগুলোর চারপাশে মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুন গুন শব্দে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসছে মনের আনন্দে।
বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছেন এবার। আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক ওষুধ প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, গত বছর জেলাটিতে ১৬৯২ হেক্টর জমিতে ২২ হাজার ৯৫৫ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৭৩০ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ৩২০ হেক্টর, জীবননগরে ৪০০ হেক্টর ও দামুড়হুদায় ৩২৫ হেক্টরসহ মোট ১ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবারে ৮৩ হেক্টর জমিতে আবাদ বেশি হয়েছে। এবারের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ২৩ হাজার মেট্রিক টন।
স্থানীয় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং আম লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরই আমের আবাদ বাড়ছে। চুয়াডাঙ্গায় বেশি আমের আবাদ হচ্ছে- আমরুপালি, লেংড়া, ফজলি, হাড়িভাঙা, মল্লিকা, থাই, গোপালভোগ, বারি ১০, দেশি ও বেনারসি সিতাভোগ।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ভগিরথপুর গ্রামের আম চাষী বাবুল মিয়া বলেন, এ বছর আম গাছে প্রচুর মুকুল এসেছে। এখন পর্যন্ত আমের মুকুলে কোনো রোগ-বালাই নেই। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ যদি না আসে, আশা করছি, প্রতিটি আম গাছেই পর্যাপ্ত পরিমাণে আম ধরবে।
চুয়াডাঙ্গা সদরের গাড়াবাড়িয়া গ্রামের আম বাগানের মালিক রাসেল আহম্মেদ বলেন, বাগানের অধিকাংশ গাছই মুকুলে ছেয়ে গেছে। এবার কুয়াশা কম থাকায় মুকুল ভালো হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক নাঈম আল সাকীব বলেন, বর্তমানে জেলাতে আবাদি জমিতে আমের চাষ করছেন কৃষকরা। আমের ভালো ফলন পেতে কৃষকদের বিভিন্ন সময় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এজন্য মাঠ পর্যায়ে আমাদের অফিসাররা কাজ করছেন। আশা করা যায়, গত বছরের থেকে এ বছর আমের উৎপাদন অনেক বেশি হবে।