ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাইকে খুন

লালমনিরহাট, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, লালমনিরহাট, বার্তা২৪.কম | 2023-07-22 12:50:48

ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চাচাত ভাইয়ের হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন তরুণ ব্যবসায়ী কামার হাবিবুর রহমান হাবিব (২৩)। ঘাতক এরশাদ (৩৫) হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোজাম্মেল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত হাবিবুর রহমান হাবিব লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের বুমকা গ্রামের কামার আব্দুল গনির ছেলে। গ্রেফতারকৃত এরশাদ ওই এলাকার নুরজামালের ছেলে। নিহতের জ্যাঠাত ভাই।

ঘাতকের দেয়া আদালতের জবানবন্দির বরাত দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক জানান, ‘উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে বাবার কামারের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন হাবিবুর রহমান হাবিব। দিনভর বাবার হাতে তৈরি দা-বটি, কুড়াল, কোদাল, কাস্তে, বেকিসহ সকল মালামাল বিক্রির জন্য কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন বাজারে পাইকারী বিক্রি করেন হাবিব। শিক্ষিত হাবিব বাজারজাত করায় তার পণ্যের উপর আকৃষ্ট হয় ক্রেতারা। এদিকে তার চাচাত ভাই এরশাদের কামারের ব্যবসায় মন্দাভাব দেখা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাবিবকে হত্যার পরিকল্পনা করে ঘাতক চাচাত ভাই এরশাদ।

তিনি আরও জানান, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতেই গত বছর ২৬ আক্টোবর রাতে কৌশলে বাড়ির পাশে ধরলা নদীর পাড়ে শীবেরকুটি কলাবাগানে নির্জন এলাকায় হাবিবকে ডেকে নেয় এরশাদ। এরপর গল্পের এক ফাঁকে লোহা পেটানো বড় হাতুড়ি দিয়ে মাথায় বেশ কিছু আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যান ঘাতক এরশাদ। পরদিন স্থানীয়দের খবরে সদর থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে। যাতে স্বাক্ষর করে ঘাতক এরশাদ।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুল গনি বাদী হয়ে অজ্ঞতনামা আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রায়হান আলী সাড়ে তিন মাসেও কোনো সূত্র উৎঘাটন করতে পারেননি।

অবশেষে এ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করে সদর থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোজাম্মেল হককে দায়িত্ব দেন পুলিশ সুপার। এরপর নিহত হাবিবের ফোন কলের লিস্টসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তদন্ত করে মাত্র সাতদিনে হত্যার সূত্র উৎঘাটনে সমর্থন হন তদন্ত তিনি। এরপর ঢাকায় অবস্থানরত ঘাতক এরশাদকে গ্রেফতার করে হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি জব্দ করে শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) আদালতে হাজির করে জবানবন্দি নেন বিচারক। এ সময় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদি হাসান মন্ডলের আদালতে জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করেন এরশাদ।

লালমনিরহাট পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক জানান, স্বপন হত্যা মামলায় ছয়দিনে ক্লু উদ্ধার করায় হাবিব হত্যা মামলাটিও পরিদর্শক মোজাম্মেল হককে দেওয়া হয়েছে। এ ক্লুলেস হত্যা মামলার ক্লু উৎঘাটনসহ ঘাতককে মাত্র সাত দিনে গ্রেফতার করতে সক্ষম হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তাকে পুরুস্কৃত করা হয়েছে।

মূলত ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলেও জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর