মহান ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি ধরে রাখতে ‘হবিগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার’ নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৭ বছর আগে। এমনকি শহীদ স্থাপনের জন্য ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করা হয়। সেই শহীদ মিনারের জায়গায় এখন রাতে শিয়াল হাঁকে আর দিনে অস্থায়ী মাইক্রোবাস ষ্ট্যান্ড ও ফুচকার দোকান বসে।
২০১২ সালের ২৩ এপ্রিল হবিগঞ্জ-৩ (হবিগঞ্জ সদর-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট মো. আবু জাহির কলেজ রোডে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ জন্য প্রায় ৬ শতক জায়গায় মাটি ভরাট করা হয়। জেলা পরিষদ তা বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও ভূমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে গত ৭ বছরেও তা দৃশ্যমান হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সময়ে এই ভূমিটি ছিল কারা কর্তৃপক্ষের। ধূলিয়াখালে নতুন কারাগার নির্মাণের পর ৮৫ শতক ২৫ অযুতাংশ ভূমি সরকারি খাস খতিয়ানের অর্ন্তভুক্ত হয়। ইতোমধ্যে ওই ভূমির অধিকাংশ জায়গাজুড়ে বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল গড়ে উঠেছে। পুরো জায়গাটি ওই প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানালেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) আব্দুল মোতাকাব্বির। তবে শহীদ মিনারের ভূমি বরাদ্দেন জন্য কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি। সুতরাং কি পরিমাণ ভূমিতে শহীদ মিনার গড়ে উঠবে তার নিশ্চয়তা নেই।
প্রায় ৭ বছরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কুদ্দুছ আলী সরকার বলেন, শহীদ মিনার করতে এখনই ২০ লাখ বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব। কিন্তু এখনও জেলা পরিষদকে ভূমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।
জেলার সাংস্কৃতিক কর্মীদের দাবি, ২১ ফেব্রুয়ারি মহান আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে শহরবাসী হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজের শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণসহ নানা আয়োজন করে আসছেন যুগ যুগ ধরে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণটি ছোট হওয়ায় শহরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার দ্রুত নির্মাণ সম্পন্ন করা।
এ প্রসঙ্গে এমপি আবু জাহির জানান, শহীদ মিনারের জন্য মাটি ভরাটে ২৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। বাঁকি কাজ অর্থের অভাবে হয়নি। শহরে সভা-সমাবেশ করার কোনো মুক্তাঙ্গন নেই। তাই শহীদ মিনারকে কেন্দ্র করে যাতে একটি মুক্তাঙ্গন গড়ে তোলা যায় সে ইচ্ছে প্রকাশ করেন তিনি। এজন্য ১/২ কোটি টাকা দরকার। তিনি আগামীতে মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ বরাদ্দ আনার চেষ্টা করবেন বলেও জানান।