জেলার ৯.৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় ৩৫ হাজার ৭৩০ জন লোকের বসবাস হবিগঞ্জ পৌরসভায়। ১৮৮১ সালে পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর ১৯৯০ সালে হবিগঞ্জ পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু কাগজে কলমে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও এখনও সেই স্বাধ গ্রহণ করতে পারেননি পৌরবাসী।
বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত পৌরসভায় দিন দিন বেড়েই চলেছে নাগরিক দূর্ভোগ। অপ্রশস্ত রাস্তা, যানজট, যত্রতত্র ময়লা আবর্জনার স্তূপ পৌরবাসীকে নাজেহাল করে দিচ্ছে।
এদিকে, হবিগঞ্জ পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌধুরী বাজার দূর্ভোগের অপর নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদা-জলে একাকার হয়ে যায় ব্যস্ততম এই রাস্তাটি। অথচ এই রাস্তা দিয়েই শহরের সবচেয়ে বড় সবজি বাজার (চৌধুরী বাজার) যেতে হয়। শুধু শহরবাসী নয়, জেলার আজমিরীগঞ্জ, নবীগঞ্জ, বানিয়াচং ও লাখাই উপজেলাবাসীও এই বাজার থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করতে আসেন।
ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, এই বাজারে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ বাজার করেন। তাদের দাবি, শুধু ক্রেতারাই নন, এই রাস্তার কারণে ব্যবসায়ীদেরও অনেক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। বাজারের মালামাল নিয়ে আসতে পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দূর্ভোগ। বিভিন্ন সময় গাড়ি থেকে মালামাল পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করলেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী আব্দুল বারিক বলেন- ‘সড়কটি হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজার চৌরাস্তা থেকে পূর্ব দিকে চৌধুরী বাজার পুলিশ ফাঁড়ি হয়ে খোয়াই নদের বেইলি সেতু এবং চৌরাস্তা থেকে পশ্চিম দিক দিয়ে চৌধুরী বাজার-বগলাবাজার হয়ে কিবরিয়া সেতু পর্যন্ত বিস্তৃত। সড়কটি দিয়ে জেলা সদর থেকে বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ ও নবীগঞ্জ উপজেলা সদরে চলাচল করে হাজার হাজার মানুষ। অথচ দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সড়কের বিভিন্নস্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আর সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব গর্তে পানি জমে কাদা পানিতে একাকার হয়ে যায়।’
তিনি বলেন- ‘অনেক সময় পানির কারণে গর্ত আছে কি-না, তা বোঝা যায় না। এতে রিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চাকা গর্তে পড়ে প্রায়ই উল্টে যায়।’
অন্য ব্যবসায়ী বাজারের ব্যবসায়ী নিরঞ্জন বণিক বলেন, ‘এ সড়কটি ছয়-সাত বছর ধরে কোনো সংস্কার করেনি হবিগঞ্জ পৌরসভা। বড় বড় গর্ত থাকার কারণে প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। এ কারণে রিকশাচালকেরা এ এলাকায় আসতে চায় না। এতে করে ব্যবসায়ীসহ ক্রেতাদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়।’
বানিয়াচঙ্গের ক্রেতা মামুন মিয়া বলেন- ‘চৌধুরী বাজার আসতে এখন আর মন চায় না। কিন্তু না এসে পাড়ি না। বাধ্য হয়ে আসতে হয়। বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে এখানে বাজার করতে আসলে কাদা পানিতে সম্পূর্ণ শরীর ভিজে যায়।’
এ ব্যাপারে জানতে হবিগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র দিলিপ দাসের সাথে মোবাইল ফোনে বার বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।