পাবনায় জোড়া খুনের মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাড়ারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খানকে। অথচ ঘটনার সময়ে তিনি পাবনায় ইসলামী ব্যাংকে ব্যক্তিগত কাজে উপস্থিত ছিলেন বলে ব্যাংকের সিসি টিভির ফুটেজে উঠে এসেছে।
জোড়া খুনের মামলার প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান মামলা থেকে পরিত্রান পেতে এবং এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।
পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবর আবেদনের স্বপক্ষে তিনি একটি ভিডিও ফুটেজ সংযুক্ত করেছেন। তিনি দাবি করেন, ঘটনার সময় ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার উদ্দেশ্যে তিনি ঘটনাস্থল থেকে ২০ কিলোমিটার দুরে পাবনা শহরে ইসলামী ব্যাংকে অবস্থান করছিলেন। এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর বিকেল ৪.১৫ মিনিটের দিকে। ইসলামী ব্যাংকের সিসি টিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান (সাদা পাঞ্জাবী-পাজামা পরিহৃত) একই দিন বিকেল ৩.৫৮ মিনিটে পাবনাস্থ ইসলামী ব্যাংকে অবস্থান করছিলেন। আবু সাঈদ দাবি করেন, ঘটনার দিন বিকেল ৪.৩০ মিনিট পর্যন্ত তিনি ব্যাংকে অবস্থান করছিলেন। ব্যাংকে বসেই তিনি মোবাইল ফোনে এলাকার হত্যাকাণ্ডের খবর পান। ঘটনাস্থল শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দুর্গম স্থানে।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান জানান, এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা ও ভিন্নখাতে প্রবাহের লক্ষ্যে বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মীরা ঈর্ষান্বিত হয়ে তাকে মিথ্যা হত্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর অপচেষ্টা করছেন। তিনি এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্তের আবেদন জানিয়ে ইতোমধ্যে রাজশাহী ডিআইজি, পাবনার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকেও আবেদনের অনুলিপি প্রেরণ করেছেন।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক জানান, মামলার তদন্ত চলছে। মামলার প্রধান আসামি ইতোমধ্যে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছেন এমন দাবি করে বলেন, সে বিষয়টি মাথায় নিয়েই পুলিশের তদন্ত কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, পাবনা সদর উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নের ভাড়ারা গ্রামে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, পূর্ব বিরোধে দুইপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে স্থানীয় মহসিন খান লষ্কর (৬৮) ও আব্দুল মালেক (৪০) নামের দুইব্যক্তি নিহত হয়। এ ঘটনার পর ৫১ জনকে আসামি করে স্থানীয় সুলতান মাহমুদ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দায়েরকৃত মামলায় ভাড়ারা ইউপি চেয়ারম্যান, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ খানকে প্রধান আসামি করা হয়।