১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা। ৪৩৯.৬০ বর্গ কিলোমিটারের এই উপজেলায় জনসংখ্যা ২ লাখ ৮৫ হাজার ৪০ জন।
বিশাল এই জনগোষ্ঠীর চিকিৎসার জন্য রয়েছে মাত্র একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, যার রয়েছে মাত্র ৫০টি শয্যা। যেখানে প্রতিদিন তিন শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু চিকিৎসক সংকটের কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন না তারা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণসহ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় যুগান্তকারী উন্নয়ন চান উপজেলাবাসী।
দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সম্প্রতি নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। তবে বাড়েনি চিকিৎসকের সংখ্যা, স্টাফ সংকট তো আছেই।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, দিন দিন বেড়েই চলেছে রোগীর চাপ। নবীগঞ্জ উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলা বানিয়াচং থেকেও অনেক সময় রোগীরা এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন। বর্তমানে ২২ জন চিকিৎসকের স্থলে চিকিৎসা দিচ্ছেন মাত্র পাঁচজন। আর স্টাফ সংকট রয়েছে অনেক। অথচ প্রতিদিন বহির্বিভাগে গড়ে সাড়ে ৩০০ রোগী সেবা নিতে আসেন। এছাড়া, আন্তঃবিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৫০ জন রোগী সব সময় ভর্তি থাকেন। পাশাপাশি জরুরি বিভাগে রাতে প্রায় ২৫০ জন রোগী সেবা নিয়ে থাকেন।
এত রোগীর চাপ সামলাতে গিয়ে হিমশমি খেতে হয় পাঁচজন চিকিৎসককে। দিনরাত সেবা দিয়েও রোগীদের কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা দিতে পারেন না তারা।
স্টাফ সংকটের কারণে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি রোগীদের অতিরিক্ত সেবা প্রদানের ইচ্ছা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। রয়েছে উন্নত যন্ত্রাংশেরও অভাব। আর তাই রোগীর অবস্থা সামান্য জটিল হলেই পাঠিয়ে দিতে হয় হবিগঞ্জ অথবা সিলেটে।
এদিকে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চারদিকে সীমানা প্রাচীর না থাকায় রাতে দেখা যায় অপরাধীদের আনাগোনা। ছিনতাইকারী ও মাদকবেসীদের আড্ডা বসে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আঙ্গিনায়। এতে রোগীদের ভোগান্তিসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুস সামাদ বলেন, চিকিৎসা সেবার মান আগের তুলনায় ভালো হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। কিন্তু সেই তুলনায় চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় সেবাদানকারী কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে না। প্রয়োজনীয় জনবল সংকট থাকায় ২৪ ঘণ্টা রোগীদের সেবা প্রদান করেও শতভাগ সেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, ‘৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ করার পর থেকেই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অথচ যে পরিমাণ জনবল প্রয়োজন তা আমাদর এখানে নেই।’
চিকিৎসক ও স্টাফ সংকট সমাধান করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।