আর মাত্র এক সপ্তাহ পর বগুড়ার জেলার ১২টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। কিন্তু এখনো জমে উঠেনি নির্বাচনী প্রচারনা। উৎসাহ উদ্দীপনা নেই প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে। এমনকি ভোটারদের অনেকেই জানেন না ভোট গ্রহণের তারিখ।
বগুড়ার ১২ উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে কথা বলে এমনটি জানা যায়। ভোটারদের অনেকেই আবার বলেছেন, বিএনপি ভোটে না আসায় ভোটের আমেজে অনেকটা ভাটা পড়েছে। তবে বিএনপি সরাসরি ভোটে না আসলেও বিএনপির অনেক নেতা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে।
তাদের পক্ষে নেতাকর্মী থাকলেও বহিষ্কার আতংকে তারাও এখন প্রকাশ্যে আসছেন না। অন্যদিকে বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ না থাকায় আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীরাও রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে। তবে ৫টি উপজেলায় নৌকা মার্কার প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামীলীগ থাকায় সেখানে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে তাদেরকে।
বগুড়া শহরের গোহাইল রোড এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ি আসাদুল হক। তিনি নিজেও জানেন না বগুড়া সদরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ। উপজেলা ভোট নিয়ে তেমন কোন আগ্রহ নেই উল্লেখ করে ব্যবসায়ি আসাদুল হক বলেন, 'শুধু এবার না, পৌরসভার ভোটারদের উপজেলা নির্বাচন নিয়ে প্রতিবারই আগ্রহ কম থাকে'।
বগুড়া সদরের সাবগ্রাম এলাকার ভ্যান চালক ফজলার রহমান বার্তা ২৪.কমকে বলেন, 'এখন পর্যন্ত ধানের শীষের কোন ক্যানভাস (মাইকে প্রচার) শোনা যায়নি। তাই ভোট দিতে যাওয়ার আগ্রহ নেই'।
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার দড়িদহ গ্রামের রহিম উদ্দিন, সিফাত আলী, মনোয়ারাসহ বেশ কয়েকজন ভোটারের সাথে কথা বললে তারা জানান, গত সংসদ নির্বাচনে তাদের গ্রামের অনেকেই ভোট দিতে পারেন নি। একারনে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন চিন্তা করেননি।
বগুড়ার ধুনট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জিয়াউল আলম বার্তা ২৪.কমকে বলেন, 'এই উপজেলায় ভোটের চিত্র ভিন্ন। চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী। দুই জন আওয়ামীলীগের এবং দুইজন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা। এই উপজেলায় সব প্রার্থীরা ভোটারদেরকে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত করানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন'।
শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে বহিস্কৃত নেত্রী বিউটি বেগম বার্তা ২৪.কমকে বলেন, 'তার ভোটারদেরকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য। পাশাপাশি বিএনপির নেতারাও তার বিরোধীতা করে অপর এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন'। তিনি জানান, ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ পেলে তার জয় নিশ্চিত।
এদিকে জামায়াতের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা ২৪.কমকে জানান, প্রতিটি উপজেলাতেই জামায়াতের ব্যাপক ভোট রয়েছে। বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জামায়াত প্রার্থীরা আওয়ামীলীগ এবং বিএনপির প্রার্থীদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৫টিতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এবার তাদের নেতা-কর্মী, সমর্থক এবং ভোটারদের প্রতি নির্দেশনা রয়েছে, কেউ যেন ভোটকেন্দ্রে না যায় এবং কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে।
বিএনপি নেতা যারা দলের আদেশ অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরও অনেকে জামায়াতের এ ধরনের নির্দেশনার কথা শুনেছেন মর্মে উল্লেখ করে বলেন, তারাও চেষ্টা করছেন এ ধরনের ভোটারদেরকে বুঝিয়ে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য।