দেশের জন্য জীবনবাজি রেখে যুদ্ধে যাওয়া মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের পরম সম্পদ। স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে বুক ফুলিয়ে গর্বের সঙ্গে বসবাস করার অধিকার পেয়েছি তাদের কারণে। কিন্তু সেই বীর সেনানীদের অনেকেই ভালো নেই। প্রায়ই গণমাধ্যমে খবর আসে, মুক্তিযোদ্ধার বিনাচিকিৎসায় অর্ধাহারে-অনাহারে দিনযাপনের কথা।
তেমনি এক অসহায় মুক্তিযোদ্ধা মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার আতাউর রহমান আতা (৮০)।ব্রেইন স্ট্রোক করে মরণব্যাধি পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন থেকে শয্যাশায়ী। ২ মেয়ে ও স্ত্রীকে তার অভাবের সংসার। অর্থিকভাবে অস্বচ্ছল হওয়ায় তার পরিবারের পক্ষে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, অসুস্থতার শুরুতে দলীয় কয়েক নেতা ও মুক্তিযোদ্ধারা তার চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিলেও এখন আর কেউ খোঁজ রাখে না।
বাংলাদেশ আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। দেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। কিন্তু আতাউর রহমান আতার অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। কুলাউড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করা এ বীর মুক্তিযোদ্ধা জীবন সায়াহ্নে এসে থমকে আটকে গেছেন অর্থের কাছে। তিনি বাচঁতে চান। তাই তিনি চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমানের পরিবারসূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত সাবেক কমান্ডার আতা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজের জীবনবাজি রেখে যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি ৪ নং সেক্টেরের অধীনের দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধ করেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কুলাউড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি শুধু উপজেলা কমান্ডারই ছিলেন না রাজনৈতিকভাবে তিনি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের কুলাউড়া উপজেলা কমিটির বিভিন্ন দায়িত্ব পালনসহ বর্তমানে সহ-সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রতিবাদ করে গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ ৪ মাস কারা ভোগ করেন। যৌবনে তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও নিজের প্রিয় রাজনৈতিক দলের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করলেও বার্ধক্যে এসে তিনি আজ অসহায়। পাশে নেই প্রিয় দল ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠন।
মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান আতার স্ত্রী জানান, পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে স্বামীর চিকিৎসা করাতে পারছেন না। তার চিকিৎসার জন্য অনেক অর্থ প্রয়োজন।