লক্ষ্মীপুরে খাল থেকে মাটি কেটে মান্দারী-দাসেরহাট সড়কের দু'পাশ ভরাট করা হচ্ছে। ২০ কোটি টাকার সড়ক উন্নয়ন কাজের মধ্যে মাটির ভরাটের জন্য প্রায় ২ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু সামান্য অর্থ খরচ করে পুরো টাকা হাতিয়ে নিতে সরকারি খালই বেছে নিয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। অন্য জায়গা থেকে মাটি কিনে আনার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।
এদিকে এ বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে মাটিগুলো আবার খালে গিয়ে পড়বে। এতে সড়কের পাশ আবার মাটি শূন্য হয়ে যাবে। এমন পরিস্থিতির আশঙ্কায় সড়ক নির্মাণ কাজে বাধা দেয় স্থানীয়রা।
অন্যদিকে সড়ক উন্নয়ন কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। নিয়মনীতি না মেনেই চলছে মান্দারী থেকে দাসেরহাট এ ৯ কিলোমিটার সড়কের কাজ । যার কারণে এ বর্ষাতেই সড়কটি পুনরায় খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার মান্দারী থেকে দাসেরহাট সড়ক নির্মাণ কাজ করছেন শ্রমিকরা। এদিকে পাশের খাল থেকেই অবৈধভাবে ভেক্যু দিয়ে মাটি কেটে সড়কের দু’পাশ ভরাট করতে দেখা গেছে। এভাবে প্রায় ৩ কিলোমিটর ভরাট করা হয়েছে। এদিকে খাল ও রাস্তার মাঝে কোন সুরক্ষা দেয়াল নেই। যার কারণে বৃষ্টির পানিতে ফুটপাতের এসব মাটি ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা খুবই বেশি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ সড়কটি খানাখন্দে ভরা। যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়তে হয়। সম্প্রতি মান্দারী-দাসেরহাট সড়কটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করে সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রী, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সাংসদ এ কে এম শাহজাহান কামাল। যাতায়াতে দুর্ভোগ লাঘবেই সড়ক উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। পাশের খাল থেকে মাটি কেটে সড়কের দু’পাশ ভরাট করা হচ্ছে। এতে বর্ষায় সড়কে খানাখন্দ ও পাশের মাটিগুলো ধ্বসে পড়বে।
জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, জেলা মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নিতকরণ প্রকল্পের অধীনে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দে মান্দারী-দাসেরহাট সড়কের ৯ কিলোমিটার উন্নয়ন কাজ চলছে।এরমধ্যে প্রায় ২ কোটি টাকা সড়কের পাশে মাটি ভরাটের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সড়কটির দুই পাশে ৩ ফুট করে ৬ ফুট প্রশস্ত করে ১২ থেকে ১৮ ফুটে উন্নিত করা হচ্ছে। দুই পাশে আরো ৬ ফুট মাটির ফুটপাত নির্মাণ করার কথা রয়েছে। ২০১৮ সালের জুন মাসে দরপত্রের মাধ্যমে এ কাজটি পান জয়েন্ট বেঞ্চার জেড এস এম বিল্ডার্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, মো. মহি উদ্দিন এবং ওরিয়ন ট্রেডিং এন্ড বিল্ডার্স। এই প্রকল্পের কাজ ২০২০ সালের ৩০ জুন-এর মধ্যে সম্পূর্ণ হওয়ার কথা রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের কল করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত দত্ত বলেন, সড়কটি নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। নিয়মানুযায়ী অন্য জায়গা থেকে মাটি কিনে এনে সড়কের দু’পাশ ভরাট করতে হবে। অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।