বগুড়ার হাট বাজারে হঠাৎ করে পেয়াজের দাম বেড়েছে। তাও আবার কেজি প্রতি ১০ থেকে ১২ টাকা। গত এক সপ্তাহ আগেও খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে।
একই পেঁয়াজ বৃহস্পতিবার থেকে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, হঠাৎ করে পাইকারি বাজারে আমদানি কমে যাওয়ায় দাম বেড়ে গেছে।
আর পাইকারী বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি কমে যাওয়ায় দেশি পেঁয়াজের উপর চাপ পড়েছে। এ কারণে সাময়িক দাম বাড়লেও কয়েক দিনের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম আবারো কমতে শুরু করবে।
শুক্রবার (৮ মার্চ) বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজার, বকশী বাজার, কালিতলা হাট, খান্দার, বউ বাজার, ছাড়াও বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩২ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১৬ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
গত এক সপ্তাহ আগেও এসব হাটবাজারে দেশি পেঁয়াজ ১৮ থেকে ২০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১২ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
বগুড়া শহরের কাঁচা মালামালের পাইকারী আড়ৎ রাজাবাজারের ব্যবসায়ী রাজীব বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি কমে গেছে। রাজাবাজার আড়তে এক সপ্তাহ আগেও প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ ট্রাক ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হতো। সেখানে এখন দুই থেকে তিন ট্রাক পেঁয়াজ আসছে।’
তিনি বলেন, ‘ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে বন্যা ও ঝড়বৃষ্টির কারণে সেখানেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। এ কারণে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ আমদানি কমিয়ে দিয়েছে।’ রাজাবাজারে কৃঞ্চ ভাণ্ডারের ব্যবসায়ী ফজের আলী বলেন, ‘একদিকে ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কম, অন্যদিকে গত কয়েক দিনে অসময়ের বৃষ্টিতে পাবনা অঞ্চলে পেঁয়াজের জমিতে পানি আটকে যায়। এ কারণে জমি থেকে পেঁয়াজ উঠাতে দেরি হচ্ছে।’
শুক্রবার পেঁয়াজের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজ পাইকারি ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কম থাকলেও চাহিদা না থাকায় দাম বাড়েনি।
তবে ভারতীয় বীজে চাষ করা মেহেরপুরের পেয়াঁজ বলে পরিচিত লাল রং এর পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে আট টাকা কেজি ও খুচরা বাজারে ১৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা সেলিম হোসেন, আব্দুল গফুরসহ অনেকেই বলেন, প্রতি বছর এই সময় দেশি পেঁয়াজ ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এবারও তাই ছিল। কিন্তু হঠাৎ কেজি প্রতি ১০ টাকা বেড়ে যাওয়ার কারণ তারা খুঁজে পাচ্ছেন না।
পেয়াঁজ আমদানিকারকরা জানান, ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় চড়া দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশে বিক্রি করে কেজি প্রতি দুই থেকে তিন টাকা লোকসান গুনতে হয়। এ কারণে তারা পেঁয়াজ আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন।
গত এক সপ্তাহে হিলি স্থল বন্দর দিয়ে মাত্র ১১৮টি ভারতীয় পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এতে দুই হাজার ৩৬০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে।