কুষ্টিয়া চিনিকল থেকে পাওনা টাকা পাচ্ছেন না আখ চাষিরা

কুষ্টিয়া, দেশের খবর

এসএম জামাল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, কুষ্টিয়া | 2023-09-01 05:54:47

কুষ্টিয়া চিনিকলে আখ সরবরাহ করেও পাওনা টাকা পাচ্ছেন না কৃষকরা। ফলে মারাত্মক সংকট ও হতাশায় পড়েছেন তারা। এমনকি আখ চাষে অনীহা দেখাচ্ছেন তারা।

মিল সূত্রে জানা গেছে, আখের কম মূল্য, চিনিকলে আখ বিক্রিতে হয়রানি এবং বিক্রির পর টাকা পেতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে গত মাড়াই মৌসুমগুলোতে এখানে আখ চাষ মারাত্মকভাবে কমে যায়। তবে চলতি মৌসুমে সাড়ে ১২ হাজার একর জমিতে ৯০ হাজার মেট্রিক টন আখ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কুষ্টিয়া চিনিকল। পরে চিনিকল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে আখ চাষে সাড়া দেন কৃষকরা। আখের ভালো ফলনও পান তারা। তবে মিল গেটে আখ সরবরাহ করে টাকা পাচ্ছেন না তারা। মিল কর্তৃপক্ষের কাছে ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত বকেয়া পাবেন কৃষকরা। এ নিয়ে অসন্তোষ ও ক্ষোভের অন্ত নেই তাদের মাঝে।

এদিকে আখ বিক্রি করে টাকা না পাওয়ায় শ্রমিকদের অর্থ পরিশোধ করতে পারছেন না কৃষকরা। অনেকের জমিতে আখ নষ্ট হচ্ছে।

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কবরবাড়ীয়া গ্রামের আখ চাষি আলম হোসেন বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘এবার ১০ একর জমিতে আখ চাষ করেছি। ইতোমধ্যে ৮ একর জমির আখ কেটে কুষ্টিয়া চিনিকলে দিয়েছি। কিন্তু এখনও কোনো টাকা পায়নি। মিল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রায় দেড় লাখ টাকা পাওনা আছে।’

জুগিয়া এলাকার আখ চাষি বজলুর রহমান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘মিলের কাছে আখ বিক্রি বাবদ এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা পাওনা আছে। জমানো টাকা দিয়ে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করেছি। এখন টাকার অভাবে ছেলের স্কুলের বেতন দিতে পারছি না।’

সদর উপজেলার ঢাকা ঝালুপাড়া এলাকার চাষি সাহাবুর রহমান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘মিলের কাছে পাওনা ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। আগামী বছর আর আখ চাষ করবো না।’

আখ চাষি ও কল্যাণ ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘কৃষকরা এভাবে হয়রানি হলে আগামী মাড়াই মৌসুমে কুষ্টিয়া জোনে কেউ আখ চাষ করবেন না। এখন কৃষকের স্বার্থ কেউ দেখে না। ফলে আমরা সবাই হতাশ। কারণ কর্পোরেশনের কথা ও কাজের কোনো মিল নেই।’

কুষ্টিয়া চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম সারওয়ার মোরশেদ বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘মিলের কাছে চাষিদের পাওনা প্রায় ১৩ কোটি টাকা। এ অর্থ চাষিদের কবে দেওয়া হবে সেটার নির্দিষ্ট দিনক্ষণ বলা সম্ভব না। কারণ এটি একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠান। উৎপাদিত চিনি বিক্রি করে সব খরচ মেটাতে হয়। আর বাকি অর্থের জোগান দেয় সরকার। তাই চিনি বিক্রি এবং সরকারি অর্থের জোগান না আসা পর্যন্ত চাষিদের পাওনা পরিশোধ সম্ভব নয়।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর