পাবনায় লাইন্সেন বিহীন অবৈধ ইটভাটা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব ইটভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ ও ফসলি জমির মাটি। ফলে ফলজ-বনজ বৃক্ষ ধ্বংসের পাশাপাশি মারাত্মক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে পরিবেশ।
এদিকে ইটভাটা স্থাপন ও ইট প্রস্তুত নিয়ন্ত্রণ আইন কার্যকর করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী র্যাব মোবাইল কোর্ট পরিচালনা শুরু করেছে।
রোববার (১০ মার্চ) দুপুরে র্যাব-১২ সিপিসি-২ পাবনা ক্যাম্পের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইটভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। শনিবার (৯ মার্চ) বিকেলে জেলার ঈশ্বরদীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহাম্মদ হোসেন ভুঁইয়া র্যাব ফোর্স নিয়ে কয়েকটি ইটভাটায় অভিযানে যায়।
এ সময় ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপনা (নিয়ন্ত্রন) আইন ২০১৩ এর ৪ এর ১৪ এবং ৫ (৩) ও ১৫ (২) (ক) ধারায় ঈশ্বরদীর আড়পাড়ার মেসার্স বজলূর রহমান সরদারের ম্যানেজার আব্দুল আলীকে ৫০ হাজার ও লক্ষীকোলার মেসার্স মল্লিক ব্রিকসের ম্যানেজার সৈমুদ্দিনকে ৬০ হাজার টাকা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হয়।
ইটভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন (লাইসেন্স) না নেওয়া, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপনা (নিয়ন্ত্রন) আইন না মেনে প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যয়, ফসলি জমির ক্ষতি সাধন, ফলজ-বনজসহ মূল্যবান বৃক্ষ ধ্বংস করে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ইট ভাটাগুলোতে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাবনার ৯ উপজেলায় ৯২টি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭৬টি ইটভাটা চলছে লাইসেন্সবিহীন। অধিকাংশ ইটভাটায় জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠখড়ি। আর ইট প্রস্তুতে ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। একদিকে অবাধে নিধন হচ্ছে ফলজ ও বনজ বৃক্ষ, অন্যদিকে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় হচ্ছে।
তথ্যমতে, ইটভাটা স্থাপনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের অনৈতিকভাবে ব্যবস্থা করে অসাধু ইট মালিকরা ইটভাটা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফাঁকা মাঠে পরিবেশের ক্ষতি নয় এমন স্থানে ইটভাটা স্থাপনের নিয়ম থাকলেও সে নিয়ম না মেনে জনবসতি এলাকায় গ্রামীণ সড়কের পাশে এই ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া স্কুল-কলেজ, স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র, জলাশয়, পুকুর ও বসতবাড়ি এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করায় পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
র্যাব-১২ সিপিসি-২ পাবনা ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার এএসপি খলিলুর রহমান বলেন, ‘ইটভাটাগুলোতে আমাদের অভিযান চলমান। খুব শিগগিরই আমরা পাবনায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধ এবং বৈধ ইটভাটাগুলো নিয়মের মধ্যে পরিচালনার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
এদিকে পাবনা জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন দাবি করেছেন, অবৈধ ইটভাটা চলতে দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যে অবৈধভাবে পরিচালিত ইটভাটাগুলোতে অভিযান এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা শুরু হয়েছে।